আজ মহান স্বাধীনতা দিবস

|

ছবি: সংগৃহীত

আজ ২৬ মার্চ। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাঙালি জাতির জীবনে ঐতিহাসিক একটি দিন। জাতিসত্তার আত্মপ্রকাশের এক মাহেন্দ্রক্ষণ। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে স্বাধিকারের দাবিতে জেগে ওঠা নিরীহ বাঙালির ওপর ইতিহাসের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। এরপর গ্রেফতার করা হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তবে গ্রেফতারের আগ মুহূর্তে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ির’ দেশ আখ্যা দেয়া হয়েছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এসে দারিদ্র্য আর দুর্যোগের বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পথে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ আর্থসামাজিক প্রতিটি সূচকে এগিয়েছে বাংলাদেশ। এ প্রাপ্তি নিয়েই এবার জাতি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, আমরা বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত এবং একটি মর্যাদা সম্পন্ন জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে চাই যাতে কেউ আমাদেরকে দরিদ্র ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ দেশ হিসেবে উল্লেখ করে অবহেলা করতে না পারে।

অনেক প্রাপ্তি নিয়ে এবার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হবে। গত বছর এমন একটি সময়ে দিবসটি উদযাপিত হয়েছিল, যখন বাংলাদেশসহ চারদিকে ছিল বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের থাবা। বর্তমানে মহামারি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে তাই এবার স্বতঃস্ফূর্ততা থাকবে বেশি।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এদিন ঢাকাসহ সারাদেশে প্রত্যুষে তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে।

এ দিবসে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা এবং ঢাকা শহরে সহজে দৃশ্যমান ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে।

একাত্তরের ২৫ মার্চ দিবাগত মধ্যরাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাঙালিদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় ও বঙ্গবন্ধুকেও গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। গ্রেফতারের পূর্বে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ওই ঘোষণা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হয়। ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালি বেসামরিক লোকের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা। কিন্তু ঠিকই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাঙালি জাতি। আত্মত্যাগ আর রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ছিনিয়ে এনেছে নিজস্ব মানচিত্র।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply