রাজশাহী কীভাবে দূষিত নগরীর তালিকায় এলো?

|

শিবলী নোমান:

বায়ুদূষণ কমানোর ক্ষেত্রে যে শহর বিশ্বসেরা ছিল এবার তার নামই উঠে এসেছে শব্দদূষণে বিশ্বের শীর্ষ চারে। সবুজশোভিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য দেশজোড়া যার খ্যাতি, সেই রাজশাহীর এমন পরিণতি কেন? জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির সর্বশেষ প্রতিবেদনটির বিস্তারিত সূচক জানা না গেলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত কয়েক বছরে এই শহরের প্রতিটি এলাকায় নির্মাণকাজ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেগুলো হয়ে উঠেছে শব্দদূষণের বড় নিয়ামক। আর নগরবাসী বলছেন, যানবাহনের হর্নের ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকায় বদলে যাচ্ছে এই শহর।

পুরানো দালান ভাঙা পড়ছে। গড়ে উঠছে বহুতল সব ইমারত। এরই কানঝালাপালা করা বিকট শব্দ তাই এখন রাজশাহী মহানগরীর প্রতিটি এলাকায়, কিছুদূর পরপরই শুনতে পাওয়া যায়। এমনকি ঘরের ভেতর থেকেও রেহাই নেই। আকাশছোঁয়া ভবনের পাশাপাশি শহরজুড়ে চলছে কয়েকশ কোটি টাকার সড়ক উন্নয়নের কাজ। সেখানে ধীরগতি হয়ে পড়া গাড়ির হর্ন আর নির্মাণযন্ত্রের একঘেয়ে শব্দ সারাদিন।

জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির যে প্রতিবেদনে রাজশাহীকে বিশ্বের চতুর্থ শীর্ষ শব্দদূষণকারী শহর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার বিস্তারিত সূচক এখনও জানা যায়নি। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলছেন, নির্মাণকাজের আধিক্যই শব্দদূষণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।

২০১৬ সালে বায়ুদূষণ কমানোয় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তালিকায় শীর্ষে থাকা শহরটিতে যানজট এখনও প্রকট নয়। তবু রাস্তায় যানবাহনের হর্নের লাগামহীনতা। কোনো কোনো এলাকায় নির্মাণকাজের তীব্র আওয়াজ চলে মাঝরাত অবধি। নগরীর উপকণ্ঠে বাস টার্মিনাল আছে। অথচ শহরের ভেতরেও এখন অন্তত ৫টি স্থানে বাস দাঁড়ায়। চাকা না গড়ালেও বিনা কারণে সেসব স্থানে তীব্র হর্ন ঠিকই দিয়ে যান চালকরা।

এর সাথে রয়েছে অটোরিকশার দাপট। যদিও তাদের হর্নই থাকার কথা না। তবু অটোরিকশার হর্নেই তৈরি হচ্ছে ব্যাপক শব্দদূষণ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বলছেন, পরিস্থিতির আরও অবনতি ঠেকাতে এখন থেকেই শব্দদূষণ কমানোর সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী মানুষের জন্য ঘরের ভেতর শব্দের গ্রহণযোগ্য মাত্রা ৫৫ ডেসিবল। রাজশাহীতে তা পাওয়া গেছে ১০৩ ডেসিবল।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply