সন্তানদের চোখের সামনে বাসের ধাক্কায় নিহত মা

|

রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় সন্তানদের সামনে প্রাণ হারান মা।

দুই শিশু সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যাবার পথে বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেলো হতভাগ্য এক মায়ের। আহত হয়েছে তার দুই মেয়ে ওহি আর রাহি। রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বরে উল্টো পথে আসা অটোরিক্সাকে সাইড দিতে গিয়ে ঘটে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। সড়কটির বিশৃঙ্খল অবস্থার জন্য পুলিশকে দায়ী করেছে স্থানীয়রা।

বেলা তখন সাড়ে ১১টা; দুই সন্তানকে নিয়ে অটোরিক্সায় স্কুলে যাচ্ছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন। ভাষানটেক ঢাকা ডেন্টাল হাসপাতালের সামনে উল্টো দিক থেকে আসা অটোরিক্সাকে সাইড দিতে যান চালক। হঠাৎই পেছন থেকে ধাক্কা দেয় ট্রাস্ট পরিবহনের একটি বাস।

প্রত্যক্ষদর্শী মো শামীম জানান, মা ও দুই সন্তানকে বহনকারী অটোরিকসা ঠিক পথেই যাচ্ছিল। উল্টোদিক থেকে আসছিল আরেক অটোরিকসা। সে অবস্থায় মা ও দুই সন্তানকে বহনকারী অটোরিকসা ব্রেক করে এবং সাইড দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময়ই পেছন থেকে ধাক্কা দেয় ট্রাস্ট পরিবহনের বাস।

উদ্ধারকারী জেসমিন আক্তার জানান, অটোরিকসা উল্টে পড়ে গেলে সাবিনা ইয়াসমিন সম্ভবত বুকে আঘাত পান। মাথায়ও সজোরে আঘাতপ্রাপ্ত হন তিনি। আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঘাতক বাসের ড্রাইভারের নাম মোস্তফা, আর স্টাফের নাম মাহফুজ।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে ঘাতক বাসটি ছিল ট্রাস্ট পরিবহনের।

গুরুতর আহত সাবিনা ইয়াসমিন ও তার দুই মেয়েকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেলে। কিন্তু দুপুর আড়াইটার দিকে মাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় সন্তানদের। নিহতের চাচা মোঃ জামিল জানান, তারা খোঁজখবর নিয়ে জেনেছেন, সেই বাসই ধাক্কা দিয়েছে।

পরিবারটি থাকতো ভাষানটেক বিআরপি কলোনির একটি বাসায়। দুর্ঘটনার ঘটনার ছয় ঘণ্টা পরও খবরটি জানতেন না প্রতিবেশিরা। এমন দুর্ঘটনার তদন্ত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শেষ হয় না। এই ঘটনার ব্যাপারেও ঘটেনি আশাবাদী হওয়ার মতো কোনো ঘটনা। ভাষানটেক থানার উপ-পরিদর্শক অনয় চন্দ্র পাল জানান, তারা কোনো গাড়ি আটক করতে পারেননি। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। ট্রাস্টের একটি বাস এই ঘটনার জন্য দায়ী, এমনটা জানানোর পর তিনি বলেন, তারা এখনও তা শনাক্ত করতে পারেননি।

সকালেই দুর্ঘটনায় একজন নিহতের পরও থেমে নেই সড়কটিতে উল্টো পথে গাড়ি চালানো। এমনকি সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে দেখা যায়নি পুলিশের কোনো পদক্ষেপও। উল্টো পথে যাওয়া যানবাহনগুলোর চালকেরাও এ ব্যাপারে দেখিয়েছেন নানা অজুহাত। স্থানীয়রা বলছেন, সড়কটিতে দুর্ঘটনা নিয়মিত ব্যাপার হলেও টনক নড়ছে না কর্তৃপক্ষের।

এম ই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply