হাওরে উজানের ঢল, দুশ্চিন্তায় কৃষকের নির্ঘুম রাত

|

উজানের ঢলে নেত্রকোণায় বাড়ছে নদ-নদীর পানি। এরই মধ্যে খালিয়াজুরিতে পানিতে তলিয়ে গেছে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের বাইরের বিস্তীর্ণ জমির বোরো ধান। কৃষকের শঙ্কা, যে কোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে তলিয়ে যেতে পারে হাওরের বিপুল পরিমাণ জমির উঠতি বোরো ধান। চাষিরা বলছেন, উজানের সর্বনাশা ঢলের খবর শোনার পর থেকে দুশ্চিন্তায় চোখের পাতা এক করতে পারছেন না তারা।

ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে নেত্রকোণার খালিয়াজুরির চুনাই, বাইদ্যার চর, কাটকাইলের কান্দা ও কীর্তনখোলা হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের বাইরে প্রায় ২শ হেক্টর জমির বোরো ধান। নদ-নদীর পানি বাড়তে থাকায় হাওরের প্রায় ৪১ হাজার হেক্টর জমির ধান নিয়েও দুশ্চিন্তায় চাষিরা। অনেকেই আধপাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে শুরু করেছেন।

স্থানীয়রা বলছেন নদ-নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় পাহাড়ি ঢলে নষ্ট হচ্ছে ফসল। উঠতি বোরো ধান দ্রুত কাটার জন্য আধুনিক মেশিন সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন চাষিরা। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। কৃষকরা বলছেন, ধান কাটা মেশিন ব্যবস্থা করলে হয়তো হাওরের ধান বাঁচানো যেতো।

অবশ্য খালিয়াজুরি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন জানালেন, হাওরের ধান কাটার জন্য যথেষ্ট হারভেস্টার মেশিন রয়েছে। এছাড়াও এবছর আরও ১৫টি হারভেস্টার বরাদ্দের জন্য ভর্তুকি দেয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই মেশিনগুলো বণ্টনের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত জানালেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত হওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। ওই বৃষ্টিপাত মাঝারি ধরনের হলে কোনো ঝুঁকি নেই। তবু কৃষকের ফসল নির্বিঘ্নে তোলার জন্য দল গঠন করা হয়েছে। তারা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে।

খালিয়াজুরি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম আরিফুল ইসলাম জানালেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসন বলছে, এখন পর্যন্ত কোথাও হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ ভাঙনি। বাঁধ রক্ষায় প্রস্তুত আছে জিও ব্যাগ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বলেও জানালেন তিনি।

নেত্রকোণায় হাওরে একমাত্র ফসল বোরো ধান। কৃষকের সারা বছরের সংসার খরচ মূলত এই বোরো ফসলের ওপরই নির্ভরশীল।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply