ধর্ষণে রক্তক্ষরণ দেখে শিশুকে হত্যা; আদালতে চাচাতো ভাইয়ের স্বীকারোক্তি

|

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

ধর্ষণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার সেই শিশু আছমা আক্তারকে (৫)। শুধু তাই নয়, হত্যার পরও শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং পরে পাশের বাড়ির শৌচাগারের ময়লার ট্যাংকে লাশ গুম করে।

এ ঘটনায় গ্রেফতার নিহত শিশু আছমা আক্তারের চাচাতো ভাই শাহাদাত হোসেন আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার বর্ণনায় এসব তথ্য দিয়েছেন।

গতকাল রোববার (৩ এপ্রিল) দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি শাহাদাত হোসেনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নবনীতা গূহ আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আদালতের নির্দেশে আসামি শাহাদাত হোসেনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন শাহাদত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিন। তিনি বলেন, শাহাদাত স্বীকারোক্তিতে বলেছেন নির্যাতনের শিকার শিশুটি তার চাচাতো বোন। তিনি ঘটনার দিন (২৪ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে বাড়ির সামনের বরই গাছের নিচে থেকে ডেকে তার ঘরে নিয়ে যান। সেখানে অন্য কেউ ছিল না। পরে শিশুটিকে মুখ ও হাত-পা চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখা দেয়। তখন আছমা চিৎকার দেয়ার চেষ্টা করলে তার নাক-মুখ চেপে ধরে তাকে মেরে ফেলে। এরপর লাশ বস্তায় ভরে বস্তাটি নিজের কক্ষের খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে শাহাদত। পরে সন্ধ্যার দিকে পাশের বাড়ির নুর নবীর ঘরের পশ্চিম পাশের শৌচাগারের ময়লার ট্যাংকের ঢাকনা খুলে সেখানে লুকিয়ে রাখে।

পুলিশ জানায়, নিখোঁজের ঘটনার ১০ দিনের মাথায় সন্দেহভাজন হিসেবে শাহাদাত হোসেনকে আটক করা হয়। পরে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি আছমাকে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যার ও লাশ গুম করার কথা স্বীকার করেন। পরে তার দেখানো মতে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পাশের বাড়ির একটি শৌচাগারের ময়লার ট্যাংক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত আছমা আক্তার চাটখিল উপজেলার বদলকোট ইউনিয়নের মেঘা গ্রামের মৃধা বাড়ির মো. শাহজাহানের মেয়ে। পাঁচ বোনের মধ্যে আছমা ছিল সবার ছোট। উদ্ধারের পর শিশু আছমার লাশ শনিবার রাতে চাটখিল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে রোববার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। ময়নাতদন্তের পর জানাজা শেষে বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে আছমার লাশ দাফন করা হয়।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply