সবুজ ঝিনুককে ঘিরে নতুন স্বপ্ন বুনছে উপকূলের মানুষ। এগিয়ে চলছে সামুদ্রিক শৈবালের চাষ। মহেশখালী চ্যানেলে চলছে এই গ্রিন মাজলস্ (Green Mussles) ও সি উইড ((Sea Weed)) এর পরীক্ষামূলক চাষ। যমুনা টিভির বিশেষ প্রতিবেদক মোহসীন-উল হাকিম সরেজমিনে মহেশখালী ঘুরে এসে জানিয়েছেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে স্থানীয় পণ্যের বাজার।
কক্সবাজার উপকূলের মহেশখালী চ্যানেলে চলছে এই সবুজ ঝিনুকের চাষ। স্থানীয় তরুণরা এগিয়ে এসেছেন। কর্মসংস্থানের নতুন এই ধারণা নিয়ে এগিয়ে চলছে স্বপ্নযাত্রা। এই তরুণদের কেউ গাড়ি চালাতেন। কেউ শ্রমিকের কাজ করতেন। কেউ বা ছিলেন বেকার। সবুজ ঝিনুকের চাষে নিজের জমি লাগে না। তাই শুরু করা যায় সামান্য পুঁজি দিয়ে। তরুণরা জানিয়েছেন কী কী করতে হয়। বাঁশের সাথে দড়ি বেঁধে সেখানে সি উইড বা সবুজ শৈবালকে ঝুলিয়ে দেয়া হয়। আস্তে আস্তে সেখানে বড় হতে থাকে সি উইড। বড় হলে তারপর বাজারে বিক্রি করার উপযোগী হয় এই সবুজ শৈবাল। এগুলোকে বাড়তি কোনো খাবার দিতে হয় না। তরুণরা জানান, তারা মূলত দেখেই দেখেই সবুজ শৈবালের চাষ পদ্ধতি শিখেছেন।
একই জায়গায় একই পদ্ধতিতে চাষ করা যায় সি উইড বা সবুজ শৈবাল, বিশ্ব বাজারে যার চাহিদা রয়েছে। সেই সাথে আছে অর্থনৈতিক গুরুত্ব। গবেষক মোহাম্মদ মহিউদ্দীন জানান, স্থানীয় তরুণরা যখন সবুজ শৈবাল চাষ করতে থাকবে তখন অর্থনীতি শক্ত হবে। মাছের উপর চাপও কমবে।
অর্থনীতিতে উপকূলের মানুষের অবদান অনেক। এর মধ্যে এসব কাজ অর্থনীতিকে শক্ত করবে। দীর্ঘ গবেষণার মাধ্যমে মহেশখালী চ্যানেলে সবুজ ঝিনুক ও সবুজ শৈবাল বা সি উইড চাষের উপযোগী জায়গা খুঁজে বের করা হয়েছে। ইউএসএআইডির ইকো ফিস বিভাগের পিএইচডি বিজ্ঞানী মো: নাহিদুজ্জামান বলেন, আমরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি যাতে বাজারটা তৈরি হয়। প্রথমেই স্থানীয় বাজার ধরার টার্গেট আমাদের। উৎপাদন যদি অনেক বেশি হয় সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশে রফতানি করার উদ্যোগ নেবো আমরা।
বন ও উপকূল বেষ্টিত এই জনপদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে। সেই প্রভাব মোকাবেলা করে পরিবেশ উপযোগী কর্মসংস্থান সৃষ্টি জরুরি। ইউএসএআইডির পরিবেশ বিশেষজ্ঞ শাহাদাত হোসেন শাকিল বলেন, আমরা প্রায় ২০ হাজার দরিদ্র জনগোষ্ঠী নিয়ে কাজ করছি। সেখানকার ১টি পরিবারের হয়তো উপার্জন ছিল ২ বা ৩ হাজার টাকা; এখন তারা ৮-৯ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারছে। এবং, যেসব নারীদের নিয়ে আমরা কাজ করেছি, তাদের পরিবারের উপার্জন বেড়েছে তুলনামূলক বেশি।
উদ্যোগটি টেকসই হলে তা উপকূলের মানুষের জীবনের মানোন্নয়নে সহায়ক হবে। উদ্যোগগুলোকে টেকসই করাটাই তাই বড় চ্যালেঞ্জ।
Leave a reply