নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করছে বিএনপি

|

শরিফুল ইসলাম খান:

অনেক কর্মসূচি সীমিত করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করছে বিএনপি। বৃহত্তর ঐক্য গঠনের পাশাপাশি কর্মকাণ্ডে শৃঙ্খলা ফেরাতে আরও কঠোর হচ্ছে দলের হাইকমাণ্ড। নেতারা বলছেন, দেশের বৃহত্তর স্বার্থেই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন জরুরি। অন্যথায় বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বাংলাদেশ। তারা বলছেন, নির্বাচনের আগে বিএনপিকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র হলেও সেগুলো সফল হবে না।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ভোট চুরির যত পন্থা আছে, সবগুলোর মাস্টার হলো আওয়ামী লীগ। আমরা এখন চাই আওয়ামী লীগ থেকে উত্তরণ। আওয়ামী লীগের পতন ঘটানো অত্যন্ত জরুরি, যদি আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই।

খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর দাবি আর নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে রমজানের আগের দুই মাস রাজপথে বেশ সরব ছিল বিএনপি। আগামী দিনগুলোতে জনসংশ্লিষ্ট ইস্যুতে সক্রিয় থাকলেও দলটির কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন হবে মূলত নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আগামী নির্বাচনটা গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে জনগণ সরকার নির্বাচিত করতে পারবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া জনগণ তাদের মালিকানা ফিরে পাবার কোনো সুযোগ নাই।

বিএনপির দায়িত্বশীল এই দুই নেতার মতে, দাবি আদায়ে ঐক্য প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, দলীয় পদ-পদবী কিংবা নেতৃত্বের প্রশ্নে ঐক্য দূরে থাক, চরম বিরোধ আছে বিএনপিতে। কোনো কোনো ইউনিটের অবস্থা এমন, ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে যতটা রাজনীতি করেন বিএনপির নেতারা, তার চেয়ে বেশি করে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হতে পারছে না। তাহলে উপায় কী? নেতাদের পেছনে ধরণা দেয়া। সেজন্য এমন মনে হচ্ছে। পদ-পদবীর জন্য এক ধরনের প্রতিযোগিতা সব দেশেই সব রাজনৈতিক দলেই আছে।

দলটির আরেক ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান জানান, এত বড় রাজনৈতিক দলে প্রতিযোগিতা থাকবে। শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটবে। যদি কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে, তাহলে যতটুকু হার্ডলাইনে যাওয়ার প্রয়োজন, ততটুকু হার্ডলাইনে যাবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

নেতাদের দাবি, যুগে যুগে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হলেও তৃণমুলের কর্মী-সমর্থকরা শ্রদ্ধাশীল দলের শীর্ষ নেতৃত্বে। আহমেদ আযম খান বলেন, ফখরউদ্দিন-মইন উদ্দিনের আমল থেকে এখন পর্যন্ত ১৫ বছর ধরে বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে; থেমে নেই। তারপরও বিএনপিকে কোনো ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে নাই। বিএনপি জনগণের দল, জনগণের দলই আছে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও বলেন, ওয়ান ইলেভেনে বিএনপির বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। বিএনপিকে ভাঙার চেষ্টা হয়েছে। সেটাও সফল হয়নি। বিএনপি অধিকতর শক্তিশালী দল হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এখন প্রায় ৪০ লক্ষের কাছাকাছি মামলা রয়েছে। এত মামলা-হামলা-খুন-গুম করে বিএনপি খাঁটি সোনার মতো হয়ে গেছে।

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, নিরেপক্ষ সরকার প্রশ্নে বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্যমত আছে, সামনে এর প্রতিফলন ঘটবে রাজপথে।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply