ভারতের গুরগাঁওতে উন্মুক্ত সরকারি জমিতে মুসলিমদের নামাজ পড়া নিয়ে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছে। খোলা ময়দানে মুসলামানদের নামাজ পড়ার প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছে বেশ কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। সম্প্রতি, ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে এদের একটি অংশ নামাজ চলাকালে হামলা চালিয়েছে। এলাকায় তীব্র সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাও বিরাজ করছে।
বিবিসি জানাচ্ছে, ঘটনার সূত্রপাত গত ২০শে এপ্রিল, শুক্রবার। গুরগাঁওয়ের অভিজাত এলাকা সেক্টর ৫৩-তে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সরকারি একটি মাঠ রয়েছে, সেখানেই জুম্মার দিনে নামাজ পড়ার জন্য জড়ো হয়েছিলেন স্থানীয় শ-পাঁচেক মুসলিম। গুরগাঁওয়ের ওই মাঠে বহুদিন ধরেই নামাজ পড়া হচ্ছে, কিন্তু সেদিন সেখানে নামাজে বাধা দেওয়ার জন্য হঠাৎ করে জড়ো হয় বেশ কিছু যুবক।
আশেপাশের ওয়াজিরাবাদ ও কানহাই গ্রামের ওই হিন্দু যুবকরা ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে দিতে নামাজের জন্য আসা ব্যক্তিদের ব্যঙ্গ করতে থাকে, তাদের অনেকের ওপর হামলা চালিয়ে প্রার্থনা পন্ড করারও চেষ্টা করে।
পরে ওই ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়লে হরিয়ানা পুলিশ নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়। ভিডিও ফুটেজ দেখে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগে ৬ যুবককে গ্রেফতারও করা হয়। অবশ্য, তারা সবাই জামিনে ছাড়া পেয়েছেন।
সোমবার গুরগাঁওতে ‘সংযুক্ত হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি’ নামে একটি সংগঠন জেলা প্রশাসকের দপ্তরের সামনে তুমুল বিক্ষোভ দেখায়। দাবি তুলেছেন, গুরগাঁওতে হিন্দু-অধ্যুষিত এলাকার আশেপাশের খোলা জমিতে মুসলিমদের নামাজ পড়া নিষিদ্ধের।
হিন্দু নেতারা বলছেন, মুসলিমরা নামাজ পড়ার নাম করে সরকারি জমি দখল করে নিচ্ছে। হিন্দু ছেলেরা নিজেদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষার জন্য লড়াই করায় তাদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে।
তাদের কথা, মুসলিমরা নামাজ পড়তে মসজিদে গেলেই পারে। এর ব্যাখ্যা আছে মুসলিম নেতাদের কাছে। জুনায়েদ শেখ নামের এক নেতা বলেন, গরিব মানুষের কাজের ফাঁকে দূরের মসজিদে যাওয়ার সময় হয় না বলেই তারা এই উন্মুক্ত জায়গায় আসেন। আমাদের একটা মসজিদ পাঁচ কিলোমিটার, আর অন্যটা আট কিলোমিটার দূরে। অটো বা রিক্সা ভাড়া দিয়ে অত দূরে কি প্রত্যেক শুক্রবারে যাওয়া সম্ভব?
স্থানীয় থানা পুলিশ নামাজ পড়তে মৌখিক অনুমতি দিলেও লিখিত কোনো অনুমতি দেয়নি। এখন ধর্মীয় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় তারা বেশ সতর্ক অবস্থায় আছে।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply