দেশের বস্ত্র বয়নের ইতিহাস আর সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে আছে জামদানি শাড়ির নাম। প্রাচীনকালের মিহি মসলিন কাপড়ের উত্তরাধিকারী হিসেবে ঢাকাই জামদানি নারীদের কাছে এক পরিচিত নাম। গত দু’বছরের ক্ষতি কাটিয়ে এবার ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা থাকলে তাঁতিদের। তবে এখনও আশানুরূপ বিক্রি শুরু হয়নি।
এককালে ঢাকাই মসলিনের ওপর নকশার বুননে তৈরি হতো জামদানি শাড়ি। মসলিন শাড়ি হারিয়ে গেলেও, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের নোয়াপাড়া ও এর আশেপাশে প্রায় দুশো বছর ধরে টিকে আছে ঢাকাই জামদানি। ঈদ সামনে রেখে সেখানকার ঘরে ঘরে চলছে কর্মব্যস্ততা।
চন্দ্রপাড়, ময়ূর প্যাঁচ, চালতাপাড়, করলাপাড়, পদ্ম কিংবা জুঁইয়ের মতো বিচিত্র নামের নকশা বাড়ায় জামদানির সৌন্দর্য। দক্ষ কারিগররা কখনও সৃজনশীলতা, কখনো অর্ডারমাফিক বোনেন শাড়ি। সুতার মান ও নকশার ঘনত্বভেদে এসব শাড়ি বিক্রি হয় হাজার-বারোশ’ থেকে শুরু করে কয়েক লাখ টাকায়।
দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় রাজধানী ও আশেপাশের জেলা থেকে ক্রেতারা ভিড় জমান নোয়াপাড়ার বিসিক জামদানি পল্লীর দোকানগুলোতে। যাচাই বাছাই-দরদাম করে কিনে নেন পছন্দের শাড়ি, জামা, পাঞ্জাবি।
এবারের ঈদে করোনার ক্ষতি পোষানোর আশা ছিল তাঁতিদের। তবে, গত দু’বছরে জমে থাকা শাড়ির কারণে তাদের কাছে নতুন অর্ডার নিয়ে যাচ্ছেন না মহাজন কিংবা দোকানদাররা।
এ দিকে, ঐতিহ্যের নিদর্শন এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে জামদানি ভিলেজ তৈরির উদ্যোগের কথা জানালেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। বলেন, স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে যদি আমরা তাদের এটি করে দিতে পারি, তাহলে তারা এখানে এসে জামদানি তৈরি করে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।
২০১৬ সালে জামদানিকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো। বিসিক জামদানি পল্লীতে ২ হাজার ৫০০ এর বেশি পরিবারযুক্ত আছে এই শিল্পে।
এসজেড/
Leave a reply