‘কুবি কালো তালিকায় আসার প্রশ্নই আসে না’

|

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এএফএম আবদুল মঈন।

নাজিমুল হক সানি:

‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো প্রতিষ্ঠানের কালো তালিকায় নেই। এমনকি কালো তালিকাভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের বানান ও নাম কোনোটার সাথেই আমাদের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিল নেই।’- সম্প্রতি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিক্রিয়ায় এভাবেই নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ড. এএফএম আবদুল মঈন।

বাংলাদেশের পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি গ্রহণ করবে না, বলে সম্প্রতি জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি ফর দ্য ক্রিয়েটিভ আর্টস (ইউসিএ)। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতির অভিযোগ করেছে ইউসিএ।

কালো তালিকাভূক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হচ্ছে রয়্যাল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা, দ্য ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা, অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভাসিটি ও কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি।

প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, সেখানে পাঁচটি কালো তালিকাভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের মধ্যে ‘কুমিল্লা’ শব্দটি আছে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে। এগুলোর ইংরেজি নাম যথাক্রমে The University of Comilla ও Cumilla University।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের ২৬ তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ২০০৬ সালে যাত্রা শুরু করা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের ইংরেজি বানান ‘Comilla University’ যা কালো তালিকাভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নামের ইংরেজি বানানের সাথে কোনোভাবেই মেলে না।

বিষয়টি নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম কালো তালিকায় আসার প্রশ্নই আসে না। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে এ ব্যাপারে ইউজিসির সাথে যোগাযোগ করেছে এবং ইউজিসি থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেবার কথা বলা হয়েছে।

কুবি উপাচার্য আরও জানান, যে প্রতিষ্ঠানটি থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে কালো তালিকাভূক্তি করা হয়েছে, তাদের সাথে অফিসিয়ালি যোগাযোগ করা হয়েছে এবং তাদের বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত কুমিল্লা নামের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সুনির্দিষ্টভাবে অবস্থান ও বিস্তারিত তথ্য দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

অন্যদিকে, ইউজিসির গণবিজ্ঞপ্তিতে ইবাইস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা-বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি ও দ্য ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে এসব প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক সনদেরও কোনো আইনগত বৈধতা নেই।

তবে ইতোমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ২৬তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কেই বুঝানো হয়েছে। এতে বিব্রত ও ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয়টির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষাথী পুষ্প বলেন, যত দ্রুত সম্ভব সমস্যাটি সমাধান করা উচিত। যাতে আমাদের সুনাম ও ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন থাকে।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী জানান, বিষয়টি সবার জন্য বিব্রতকর। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সুনামের সাথে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ করছেন। তবে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে ইউজিসির আরও কঠোর অবস্থান ও নামে-বেনামে গড়ে উঠা এসব প্রতিষ্ঠানগুলোকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা উচিত।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply