সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে না এ বছর। নোবেল ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান হেনরিক হেলডিন শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছেন। তবে ২০১৯ সালে এক সাথে দুই বছরের পুরস্কার দেয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছে নোবেল ফাউন্ডেশন।
ঐতিহাসিকভাবে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রদান করে থাকে সুইডিশ একাডেমি। তাদের সাথে আলোচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে নোবেল ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, পুরস্কারদাতার গ্রহণোযগ্যতা যখন প্রশ্নবিদ্ধ, তখন সেই পুরস্কার স্থগিত রাখাই সমীচীন।
সুইডিশ একাডেমিতে যে অস্থিরতা চলছে, তা গোটা নোবেল পুরস্কারের ওপরই নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। নোবেল ফাউন্ডেশন আশা করে যে, সুইডিশ একাডেমি এখন সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেবে তার ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে।
সুইডিশ একাডেমিতে চলমান অস্থিরতার সূত্রপাত গত নভেম্বরে। যখন ১৮ জন নারী যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন ফরাসি আলোকচিত্রশিল্পী জ্যঁ ক্লদ আরনল্টের বিরুদ্ধে। এই আরনল্ট হলেন সুইডিশ একাডেমির এক সাবেক সদস্যের স্বামী। আর তার বিরুদ্ধে যেসব যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তার অনেকগুলোই নাকি আবার ঘটেছে একাডেমির স্থাপনার ভেতরে।
সব অভিযোগই অস্বীকার করেন আরনল্ট। সুইডিশ একাডেমিও এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের ১৮ জন কমিটির সদস্য এবং আরনল্টের স্ত্রী ক্যাটারিনা ফ্রস্টেনসেনকে বহিস্কারে সম্মত হয়নি। এরমধ্যে স্বার্থের দ্বন্দ্ব আর নোবেল জয়ীর নাম ফাঁসের মতো ইস্যুতে বিভক্ত হয়ে পড়ে ১৮ জনের ওই কমিটি। যার ফলশ্রুতিতে পদত্যাগ করেন ফ্রস্টেনসেন আর একাডেমির প্রধান সারা দানিয়াসসহ ৭ জন।
একাডেমির কার্যক্রম নিয়ে সাধারণত গোপনীয়তা বজায় রাখা হলেও, এ পর্যায়ে এসে সবাই মুখ খুলতে শুরু করেন। জনসম্মুখে বিষোদগার করতে থাকেন কমিটির অন্য সদস্যের বিরুদ্ধে। এতো সব কাণ্ডের পর সুইডিশ একাডেমি একটা রসিকতায় পরিণত হয়েছে। আর সে কারণেই এ বছর স্থগিত রাখা হয়েছে, একাডেমির প্রদেয় সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার।
অবশ্য, নোবেল সাহিত্য পুরস্কার স্থগিত রাখার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে ৭ বার এমন ঘটনা ঘটেছে। যদি সেগুলোর বেশিরভাগই ঘটেছে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে। শুধু ১৯৩৫ সালে যোগ্য কেউ নেই বিবেচনা করে স্থগিত রাখা হয় পুরস্কার।
Leave a reply