রেলওয়ে স্টেশনে প্রচণ্ড ভিড়ে যাত্রীদের মালামাল খোয়া যাওয়ার ঘটনা ঘটে হরহামেশাই। পুলিশকে জানিয়েও যেগুলোর কোনো কুলকিনারা হয় না। এবার রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী আর গণমাধ্যমকর্মীদের মাঝ থেকে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজারের দুটি মোবাইল আর মানিব্যাগ নিয়ে লাপাত্তা এক ব্যক্তি। তার গতিবিধি পুরোটাই ধরা পড়ে সিসিটিভি ক্যামেরায়।
শনিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে রাজধানী কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক যখন তার কার্যালয়ে ঈদের আগাম টিকিট ইস্যুতে ব্রিফ করছিলেন তখন ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ঢাকা রেলওয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
সিসিটিভি ফুটেজ ও গণমাধ্যমকর্মীদের ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, স্টেশন ম্যানেজার যখন সংবাদ সম্মেলনে, তখন তার পেছনে পাঞ্জাবি পরিহিত এক ব্যক্তির গতিবিধি সন্দেহজনক। একেবারে ঢুকে পড়েছেন উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের মাঝে। হঠাৎ দেখায় বোঝার উপায়ও নেই, তিনি সংবাদ সংগ্রহে এসেছেন, নাকি রেলওয়ের কেউ।
স্টেশন ম্যানেজার যখন গণমাধ্যমে বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন থেকেই লোকটির নজর টেবিলের থাকা মানিব্যাগ আর দুটি মোবাইল ফোনের দিকে। সংবাদ সম্মেলন শেষ হলে যখন সবাই ম্যানেজারের রুম থেকে বের হবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনই মোবাইল ও মানিব্যাগ নিয়ে সটকে পরেন ওই ব্যক্তি। সিসিটিভির ফুটেজে যা ধরা পড়ে পুরোটাই। স্টেশনের সামনের অস্থায়ী পুলিশ বক্সের দিকে গিয়ে লোকটি সিসিক্যামেরার আওতার বাইরে চলে যান। বন্ধও করে দেন মোবাইল ফোন দুটি।
হতবিহ্বল স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, এখানে অর্ধশতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকরা আমার কাছে থাকা একটি কাগজের ছবি তুলছিলেন। এ সময় ওই ব্যক্তি আমার টেবিল থেকে মুঠোফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে দ্রুত রুম ত্যাগ করে। কতটা দুর্ধর্ষ এই চোর! যা পরে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে।
তিনি জানান, মানিব্যাগে ৪৫ হাজারের বেশি টাকা ছিল। চুরি যাওয়া দুটি ফোনের মধ্যে একটি ছিল সরকারি ফোন। এ ঘটনায় একটি জিডি করা হয়েছে।
ঈদের যাতায়াত ঘিরে রাজধানীতে চোর চক্রের আনাগোনা বেড়েছে। রেল স্টেশনেও প্রতিদিন অনেকেই খোয়াচ্ছেন মোবাইল, ব্যাগসহ মূল্যবান সামগ্রী। পুলিশের কাছে কেউ কেউ অভিযোগ করলেও চুরি যাওয়া মালামাল ফেরত পাবার নজির খুব কমই। কার্যালয় থেকে স্বয়ং স্টেশন মাস্টারের ফোন, মানিব্যাগ চুরি যাওয়ার পর কমলাপুরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড় প্রশ্নই তৈরি হলো।
Leave a reply