এক মাসেও খোঁজ নেই ইফাজের, পরিবারের অভিযোগের তির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিকে

|

এক মাসেও খোঁজ মেলেনি ইফাজের।

এক মাস পেরিয়ে গেলেও খোঁজ মেলেনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিইউবিটি’র শিক্ষার্থী ইফাজ আহমেদ চৌধুরীর। কোথায় আছে, কেমন আছে ইফাজ; তা জানে না কেউ। সন্তান সম্ভবা স্ত্রী ও গর্ভধারিনী মা আশায় বুক বেধে আছেন, শিগগিরই ফিরবে ইফাজ। তাদের অভিযোগের তীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দিকে।

ইফাজের মা জান্নাতুল ফেরদৌস সন্তানের শোকে পাগলপ্রায়। ২৪ বছর পর সন্তানকে ছাড়া এবারের ঈদও ছিল বিষণ্ণতায় ভরা। ইফাজের মা বলেন, কাঁদতে কাঁদতে পাথর হয়ে গেছি। কী করবো জানি না। অনেক খুঁজছি আমার ছেলেকে। এ বছর আমার ঘরে কোনো ঈদ ছিল না। মানুষ মারা গেলে পরিবারের যেমন অবস্থা হয়, আমাদের ঈদ সেভাবেই কেটেছে। আমরা খেতে পারিনি।

বিইউবিটির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইফাজ গেল ১১ এপ্রিল দুপুরে মিরপুরের বাসা থেকে নামাজ পড়তে বের হয়ে আর ফেরেনি। যমুনা টেলিভিশনের হাতে আসা ওই দিনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নামাজ শেষে ইফাজ সনি সিনেমা হলের সামনে দিয়ে মিরপুর এক নম্বরে একটি হাসপাতালে যায়। কিছুক্ষণ পর আবার একই পথে ফিরেও আসে।

সিসিটিভি ফুটেজে নিখোঁজ হওয়ার আগে ইফাজ।

এ সময় সনি সিনেমা হলের সামনে একটি কালো গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। বেশ কিছুক্ষণ ধরে ওই গাড়িটি ইফাজকে অনুসরণও করছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এই কালো গাড়িতেই তাকে কেউ তুলে নিয়ে গেছে। পরিবারের অভিযোগের তীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দিকে।

সন্দেহের তির এই কালো গাড়ির দিকে।

নিখোঁজ ইফাজের নানা বলেন, সনি সিনেমা হলের সামনে একটি কালো গাড়ি দাঁড়ানো ছিল। ইফাজ যখন বাসার দিকে ফিরে আসছিল তখন সেও নাই, কালো গাড়িটাও নাই। আমার সন্দেহ, প্রশাসনের গাড়িই তাকে তুলে নিয়ে গেছে।

ইফাজের মা দাবি করেন, তার সন্তানকে জীবিত ফিরিয়ে দেয়া হোক। তিনি বলেন, যেভাবে হোক আমার ছেলের সন্ধান চাই। এক মাস ধরেই অনেক ঘুরছি আমি প্রশাসনের পেছনে। ইফাজ যদি কিছু করেও থাকে তবে আইনের আওতায় আনা হোক।

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাবার একমাত্র ছেলে ইফাজ। পড়াশোনার পাশাপাশি স্ত্রী, ছোট বোন আর মায়ের সাথেই বেশি সময় কাটতো তার। নিখোঁজ ইফাজের স্ত্রী বলেন, উনার মধ্যে তো খারাপ কিছু ছিল না। উনি যদি কিছু করে থাকে তবে তাকে আইনের আওতায় আনা হোক। তবু গুম করে রাখা তো ঠিক না। আমি চাই উনাকে তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে দেয়া হোক। প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেয়া হোক, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এটিই আমার চাওয়া। আর উনাকে যদি মেরে ফেলে তবে লাশটা দেয়ার ব্যবস্থা করুক উনারা।

ইফাজ নিখোঁজের পর থানায় জিডি এবং র‍্যাব অফিসে লিখিত অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও যায় পরিবারের সদস্যরা। যমুনা নিউজের সাথে টেলিফোনে ডিএমপির ডিসি (মিরপুর) আ স ম মাহাতাব উদ্দিন বলেন, কালো গাড়িটায় তাকে (ইফাজ) তুলে নিতে পারে। আবার নাও নিতে পারে। সে স্বেচ্ছায়ও যেতে পারে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথেই দেখছি। তবে সে উদ্ধার হবে, সে ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply