ডলারের দাম আরও একদফা বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার (২৩ মে) ডলারের দর ৪০ পয়সা বাড়িয়ে দেয়ায় এখন সরকারি হিসাবে ১ ডলার কিনতে খরচ হবে ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা। তবে এখনও সঙ্কট না কাটায় ৯৫ টাকার কমে মিলছে না ডলার। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিদেশ থেকে ডলার আনার প্রক্রিয়া শিথিল করেছে সরকার। তাই প্রবাসী আয় হিসেবে এখন থেকে দেশে যত পরিমাণ ডলারই পাঠানো হোক, তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করবে না এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো। উল্টে এর বিপরীতে আড়াই শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনাও দেয়া হবে।
এর আগে দেশে পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার বা পাঁচ লাখ টাকার বেশি আয় পাঠাতে হলে আয়ের নথিপত্র জমা দিতে হতো। যে কারণে এর চেয়ে বেশি অর্থ একবারে পাঠাতে পারতেন না বিদেশে থাকা বাংলাদেশিরা। তবে নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে দেশে প্রবাসী আয় বাড়লেও এর প্রকৃত উপকার পাবেন দুর্নীতিবাজ আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদরা, এমনটি মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার (২৩ মে) এ নিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে বলা হয়েছে, পাঁচ হাজার ডলার অথবা পাঁচ লাখ টাকার বেশি প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে প্রণোদনা প্রদানে রেমিটারের কাগজপত্র বিদেশের এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে প্রেরণের বাধ্যবাধকতা আছে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বৈধ উপায়ে দেশে রেমিট্যান্স প্রেরণের বিপরীতে রেমিট্যান্স প্রণোদনা প্রদানে রেমিটারের কাগজপত্র ছাড়াই আড়াই শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা প্রযোজ্য হবে। সোমবার থেকেই এ নির্দেশনা কার্যকর হয়েছে।
এর আগে গত ১২ মে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, দেশ থেকে যেসব টাকা বাইরে পাচার হয়ে গেছে তা আবার ফেরত আসবে। বিদেশে টাকা রাখলে ব্যাংকগুলোকে সার্ভিস চার্জ বাবদ টাকা দিতে হয়। এতে লাভের চেয়ে লোকসান বেশি হয় বলে জানান তিনি। এরপরই এমন ঘোষণা এলো।
তবে এখন প্রশ্ন হলো, এতে সঙ্কট মিটবে কতটা? সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বাজারে ভোগ্যপণ্য, জ্বালানি, মূলধনি যন্ত্র ও কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় রফতানি ও প্রবাসী আয় দিয়ে আমদানি দায় শোধ করা যাচ্ছে না। যদিও সঙ্কট কাটাতে এরই মধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ সফর বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। অন্যদিকে, ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বন্ধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই সাথে গাড়ি ও ইলেকট্রনিকস ব্যবহার্য পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ টাকা জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিলাসপণ্য আমদানি বন্ধ করারও চিন্তাভাবনা চলছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১-১৯ মে পর্যন্ত দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ১৩১ কোটি ডলার। গতমাসে আসে ২০০ কোটি ডলার। গত জুলাই-এপ্রিলের মধ্যে যে পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছে তা গত বছরের এই সময়ের চেয়ে ১৬ শতাংশ কম। তবে নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে বিদেশি আয় বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা। সেই সাথে ঈদুল আজহার সময় আয় বাড়বে। ওই সময় সঙ্কট কেটে যাবে বলেও আশা তাদের।
এসজেড/
Leave a reply