সিঙ্গাপুরের শ্রমবাজারে জায়গা করে নিচ্ছে রোবট

|

‘স্পট’, নির্মাণ সাইটে জরিপের কাজ করতে সক্ষম এ রোবট। যে কাজে দু’জন শ্রমিক নিয়োগ করতে হতো, স্পট আরও কম সময়ে তা করে ফেলছে। এমন রোবট জায়গা করে নিচ্ছে সিঙ্গাপুরের শ্রমবাজারে। খবর রয়টার্সের।

কোভিডের কারণে তৈরি হওয়া লোকবল সংকট কমাতে দেশটিতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির দিকে ঝুঁকেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। বিদেশি শ্রমিকের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে রোবট ব্যবহারকে উৎসাহিত করছে দেশটির সরকারও।

দেশটির নির্মাণ খাতের নাম করা প্রতিষ্ঠান লএইচএন গ্রুপ চলতি বছর তিনটি রোবটের পেছনে বিনিয়োগ করেছে ৭২ হাজার ২৯৫ ডলার। স্মার্ট সেন্সর সিস্টেম আর সফটওয়্যারের পেছনে ব্যয় করেছে আরও ৫০ হাজার ডলার।

গ্যামন কনস্ট্রাকশনের মহা-ব্যবস্থাপক মাইকেল ও’কোনেল বলেন, যন্ত্র দিয়ে লোকবলের অভাব পূরণ করছি। এই ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ চাহিদা তৈরি করেছে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র।

লাইব্রেরিতে কাজ করছে ইবোট নামের এ রোবট।

শুধু নির্মাণ খাতে নয়, ইবোট নামে লাইব্রেরিতে কাজ করছে আরেকটি রোবট। এটিকে বলা হচ্ছে শেলফ রিডিং রোবট। বিভিন্ন তাকে এলোমেলো হয়ে যাওয়া বইগুলো শনাক্ত এবং সেগুলোর জন্য নির্ধারিত স্থানের তালিকা তৈরি করে এটি। দৈনিক ১ লাখ বই স্ক্যান করতে পারে এটি। তালিকা দেখে দ্রুততম সময়ে সঠিক জায়গায় বই রাখতে পারেন লাইব্রেরিয়ান। ম্যানুয়ালি পরীক্ষা করতে হয় না বলে কর্মী সংখ্যাও কম লাগে।

দেশটির ন্যাশনাল লাইব্রেরি বোর্ডের সহকারী পরিচালক লি ই ফুয়াং বলেন, কল নম্বরগুলো আর একের পর এক পড়তে হবে না স্টাফদের। কাজের সময় আর শ্রম কমিয়ে দিয়েছে রোবট। বাড়তি লোকবলের খরচও কমিয়েছে।

এছাড়া হোটেলে পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ মশা, পোকামাকড় ধরার জন্যও কাজ করছে নানা রকমের রোবট। সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ক্রমেই বাড়ছে রোবটের ব্যবহার। ২০২১ সালের ওয়ার্ল্ড রোবটিক স্ট্যাটিস্টিকসের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বে কর্মক্ষেত্রে রোবট ব্যবহারের হার সবচেয়ে বেশি সিঙ্গাপুরে।

ক্রাউন ডিজিটালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কেইথ ট্যান বলেন, কেবল সিঙ্গাপুর ও জাপানে নয়; বিশ্বজুড়ে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা সাহায্য করবে। এই ইন্ডাস্ট্রিকে স্বয়ংক্রিয় করার জন্য আমরা প্রকৌশলী, সফটওয়্যার প্রকৌশলী, ডেটা সায়েন্টিস্ট নিয়োগ দিচ্ছি।

সিঙ্গাপুরের শ্রম মন্ত্রণালয় বলছে, মহামারির কারণে তীব্র লোকবল সংকটের মুখে পড়েছিল দেশটি। ২০১৯ এর ডিসেম্বর থেকে ২০২১ এর সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশটিতে প্রায় ২ লাখ ৩৬ হাজার বিদেশি শ্রমিক কমে যায়। সে সময় থেকেই রোবটের ব্যবহার বেড়ে যায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে।

এলএইচএন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেলভিন লিম বলেন, মহামারির সময় সীমান্ত যখন বন্ধ ছিল, কর্মী পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। তখন থেকেই রোবট ব্যবহারে অভ্যস্থ হই আমরা।

প্রবাসী শ্রমিকের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি বা রোবটের ব্যবহার বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে সিঙ্গাপুর সরকার। এর আগে, ২০১৪ সালে মাল্টি এজেন্সি ন্যাশনাল রোবোটিকস প্রোগ্রাম চালু করে দেশটি।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply