ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্ত সমীরসহ ১০ জনের নাম উল্লে্খ করে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন জুলিউস টপ্য নামে এক আদিবাসী। অভিযোগটি আমলে নিয়ে এফআইআরভুক্ত করার জন্য ইতোমধ্যেই সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক এস. রমেশ কুমার ডাগা অভিযোগটি আমলে নিয়ে এ নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ঠাকুরগাঁও শহরের গোবিন্দনগর এলাকায় স্টার সানডের দিন যুবলীগ নেতা দেবাশীষ দত্ত সমীরের নির্দেশে সাবেক কাউন্সিলর বাবুল হোসেন, ইমরান, জনি, রাজা, পুলক, তরিকুল ইসলাম, ইসমাইল হোসেন, মহসীন ও প্রদীপ সরকারসহ এক দল সন্ত্রাসী হত্যার উদ্দেশ্যে জুলিউস টপ্যে’র উপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন থানায় মামলা দিতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ করেনি, উল্টো ভিকটিমের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করা হয়।
পরে বিক্ষুব্ধ আদিবাসীরাসহ স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানালে সাবেক কমিশনার বাবুল হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রহমান জিলানী বলেন, জুলিউস টপ্য নামে এক ব্যক্তি গত ১৭ এপ্রিলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেবাশীষ দত্ত ওরফে সমীরসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
এরপর, বিষয়টি আমলে নিয়ে অভিযোগ এফআইআরভূক্ত করতে সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন আদালত।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সভাপতি ক্যাকব খালকো জানান, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই জেলা যুবলীগ নেতা সমীর দত্ত ও পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর বাবুল হোসেনসহ একটি মহল আদিবাসীদের জমির ভুয়া দলিল করে ও আদিবাসীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের জমি জবরদখল করে আসছে। ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থাকার কারণে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেন না। গত ১৭ এপ্রিলের ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশে ওই চক্রটি গত ২২ এপ্রিল শুক্রবার দুপুরে মসজিদে মুসলিমদের উপর আদিবাসীরা হামলা করেছে বলে মিথ্যা গুজব ছড়ালে শহরের মন্দিরপাড়ার আদিবাসী ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে মারমুখী পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাবেক পৌর কাউন্সিলর বাবুলকে আটক করে।
এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ২৪ এপ্রিল স্থানীয় আদিবাসীরা ভুমিদস্যু ও সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতাদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্বারকলিপি দিয়ে দ্রুত আদিবাসীদের রক্ষায় প্রশাসনের সহযোগিতা চান।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু এ বিষয়ে আদিবাসীরা এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কোনো সহযোগিতা পাননি। বরং এক আদিবাসী যুবককে হত্যার উদ্দেশে মারপিটের ঘটনায় মামলা দিতে গেলে সদর থানা পুলিশ আদিবাসীদের মামলা না নিয়ে উল্টো আদিবাসীদের বিরুদ্ধেই ভূমিদস্যুদের মামলা গ্রহণ করেন। তাই ন্যায় বিচারের আশায় আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন আদিবাসীরা।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম জানান, আদিবাসীদের কেউই থানায় অভিযোগ বা মামলা দিতে আসেননি। থানা-পুলিশ অন্যায়ের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে, যেকোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী সহযোগিতা চাইলে পুলিশ অবশ্যই তাদের সহযোগিতা করবে।
/এসএইচ
Leave a reply