রোববার (৫ জুন) ভোর পাঁচটায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন। ঘটনাস্থলে কাজ করা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মাঝরাতেই জানিয়েছেন, পানির উৎসের অভাবে ধীরগতিতে কাজ করতে হচ্ছে তাদের। তাই আগুন নেভাতে সময় লাগছে।
শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে এসে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আশপাশে তারা তাৎক্ষণিক পানির উৎস খুঁজে পাননি। প্রথমে নিজেদের উৎসে থাকা পানি দিয়ে কাজ চালিয়ে যায়। পরে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূর থেকে পুকুর থেকে পানি আনার ব্যবস্থা। যা প্রয়োজনের তুলনায় অল্প বলেই জানায়।
রাত বাড়ার সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিস পানিশূন্যতায় যেমন ভোগে, তেমনি আগুনের এ ঘটনার ভয়াবহতাও বাড়তে থাকে। ব্যাপ্তি বাড়ে আগুনের। আর তাতে ওই এলাকার বাসিন্দারা আগুন থামাতে বৃষ্টির প্রত্যাশা করেন। রাত তিনটার দিকে বৃষ্টির দেখা মিললেও তা ছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। পরে যা থেমে যায়।
কনটেইনার ডিপোতে আগুনের এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাতজনে। আর আহত হয়েছেন অন্তত চার শতাধিক। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
কনটেইনার ডিপোতে দগ্ধ ও আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপালের পাশাপাশি আশপাশের বেসরকারি ক্লিনিক-হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনার কারণে চট্টগ্রামের সকল চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আর সকল চিকিৎসককে হাসপাতালে যোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছে চট্টগ্রামের জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালেও দগ্ধদের চিকিৎসা সেবা দিতে বলেছে সিভিল সার্জনের কার্যালয়।
জানা গেছে, হাসাপাতালে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে এ পজেটিভ, এ নেগেটিভ, এবি পজেটিভ এবং ও পজেটিভ রক্তের সংকট দেখা গিয়েছে। অবশ্য স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো এগিয়ে আসছে সহযোগিতার জন্য।
সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট। ইতোমধ্যে কাজ করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৯জন কর্মী আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে সহযোগিতা করার জন্য আশপাশের কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুরের ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন স্টেশনের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব স্টেশন থেকে ঘটনাস্থলে ইউনিট যুক্ত হয়েছে।
বিএম কনটেইনার ডিপোতে আমদানি ও রফতানির বিভিন্ন মালামালবাহী ৫০ হাজার কনটেইনার আছে বলে জানা গেছে। তাতে রাসায়নিক দ্রব্যের কনটেইনারও রয়েছে। কনটেইনার ডিপোতে কিছুক্ষণ পরপর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। এরমধ্যে চার কিলোমিটার দূরেও শোনা গেছে কোনো কোনো বিস্ফোরণের শব্দ। বিস্ফোরণে আশপাশের এলাকার বিভিন্ন ভবনের কাচ ভেঙে গেছে।
বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্যের পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ পুলিশ সদস্যের নাম তুহিন। তিনি সীতাকুণ্ড থানায় কনস্টেবল পদে দায়িত্বে রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আগুনের এ ঘটনায় অনন্ত নয়জন সদস্য আহত হয়েছেন। এরমধ্যে সাতজন শিল্প পুলিশ এবং দুইজন সীতাকুণ্ড থানার।
/এমএন
Leave a reply