ক্ষমা চাইলেন রূপঙ্কর

|

ছবি: সংগৃহীত

গান গাইতে গাইতেই না ফেরার দেশে চলে গেছেন জনপ্রিয় ভারতীয় সংগীত শিল্পী কেকে। রেখে গেলেন অনেক প্রশ্ন আর বিতর্ক। এদিকে বিতর্কের মধ্যেই অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন আরেক সঙ্গীতশিল্পী রূপঙ্কর বাগচী। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে নিজের ভুল স্বীকার করেছেন তিনি। কেকে’র পরিবারের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন এ শিল্পী।

এর আগে, ৩১ মে সকালে ফেসবুক লাইভে এসে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীতশিল্পী রূপঙ্কর বাগচীর মন্তব্যের পরই শুরু হয় বিতর্কের ঝড়। রূপঙ্করের দাবি, কেকে’র মতো ‘মুম্বাই’ শিল্পীর চেয়ে বাংলার শিল্পীরা অনেক ভাল গান করেন। এর মধ্যেই ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় কলকাতায় একটি অনুষ্ঠান গান গাইতে এসে হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় কেকে’র। এ নিয়ে বিতর্ক পৌঁছায় তুঙ্গে।

রূপঙ্করের সেই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তোলে, হতবাক পুরো সঙ্গীতাঙ্গন। সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রেটিরাও মুখর রূপঙ্করের সমালোচনায়। কেকের আকস্মিক মৃত্যুর পর তোপ বেড়ে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ হয়ে যায়। এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও পান রূপঙ্কর বাগচী। না পেরে শেষ পর্যন্ত পুলিশের দ্বারস্থ হন তার স্ত্রী।

অবশেষে চরম রোষানলে পড়েই হোক কিংবা আত্ম উপলব্ধি, এ বিষয়ে মুখ খুললেন রূপঙ্কর নিজেই। সম্প্রতি সাংবাদিক সম্মেলন করে ওই মন্তব্যের জন্য হাত জোর করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন তিনি। কেকে’র মৃত্যুতে গভীরভাবে দুঃখও প্রকাশ করেন রূপঙ্কর। বলেন, প্রথমেই প্রয়াত কেকে এর পরিবারের কাছে নিঃশর্ত দুঃখ প্রকাশ করছি। পরলোকগত গায়কের পরিবারের কারো সাথেই আমার পরিচয় নেই। তাদের কাছে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

শুধু ক্ষমাই চাননি, ইতোমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তিনি সেই বিতর্কিত ভিডিওটি ডিলিট করে ফেলেছেন বলে দাবি রূপঙ্করের। নিজের জীবনের শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, আমার সঙ্গীত জীবনে এরকম বিভীষিকার মুখোমুখী হতে হবে যেখানে ওড়িষ্যায় বসে করা একটি ভিডিও পোস্ট এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করবে যা আমার গোটা পরিবারকে ঠেলে দেবে চরম আতঙ্ক, দুর্ভাবনা ও মানসিক নিপীড়নের মধ্যে, তা আমি কল্পনাতেও ভাবিনি। মুহূর্তের অসতর্কতা যে এমন গনগনে এবং মারমুখী আবেগ বয়ে আনবে তা আমি সত্যিই কল্পনা করিনি।

রূপঙ্কর জানান, কেকে’র বিরুদ্ধে তার কোনো ব্যক্তিগত ক্ষোভ নেই। কেকে’র মতো প্রখ্যাত গায়কের নাম নেয়া প্রতীকী ছাড়া আর কিছুই ছিল না। তাকে টার্গেট করার কোনো উদ্দেশ্য তার ছিল না। রূপঙ্কর বলেন, কে জানতো যে চরম দুর্ভাগ্য কেকে’র জন্য এরকম ওঁত পেতে আছে। প্রতিথযশা এ শিল্পী কলকাতার মঞ্চে গাইতে এসে যেভাবে প্রাণ হারালেন তা ভীষণ হৃদয় বিদারক।

এদিকে, রূপঙ্করের সেই মন্তব্যের জেরে প্রভাব পড়তে চলেছে তার সঙ্গীত ক্যারিয়ারেও। সম্ভবত গায়ক রূপঙ্ককরের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করতে চলেছে মিও আমোরে গোষ্ঠী। মিও আমোর’র জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেল গেয়েছিলেন রূপঙ্কর। সাম্প্রতিক বিতর্কে তারা নেটমাধ্যমে জানিয়েছে, জিঙ্গল নিয়ে যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, আলোচনা সমালোচনার মধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে কেকের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট। যেখানে বলা হয়েছে, হৃদযন্ত্রজনিত সমস্যা ছিল কেকের। তবে রাসায়নিক বিশ্লেষণের পর পাওয়া যাবে চূড়ান্ত রিপোর্ট। এখন পর্যন্ত রিপোর্টে অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায়নি। কেকে’র মৃত্যুর মূল কারণ জানা যাবে চূড়ান্ত রিপোর্টে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply