২১ মরদেহ শনাক্তে ৩৭ জনের নমুনা সংগ্রহ

|

হাসপাতালে খোঁজ নেই, মরচ্যুয়ারিতে যারা, তাদেরকেও এক দেখায় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তাই কন্টেইনার ডিপোতে অপারেটরের কাজ করা জুয়েলের সন্ধানে এখন ভরসা ডিএনএ টেস্ট। জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ২১ জনের মরদেহ শনাক্তে ৩৭ জনের ডিএনএ স্যাম্পল নেয়া হয়েছে। তবে এ পরীক্ষার ফল পেতে সময় লাগবে এক মাস! চমেকে চিকিৎসাধীন ১০২ জনের মধ্যে ১৫ জনেরই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। তাদের বাঁচানো কঠিন বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।

লরিচালক মাঈনুদ্দিনকে খুঁজে পাচ্ছে না তার পরিবার। সর্বশেষ আগুন লাগার সময় ভিডিও কলে কথা হচ্ছিল বাবার সাথে। মাঈনুদ্দিনের বাবা বললেন, আমি ঢাকায় চাকরি করি, ও আমাকে ভিডিওকলে আগুন দেখাচ্ছিল। আমি ওকে বললাম আগুন লাগছে, বাবা তুই ওখান থেকে সরে যা। আমিও কাজ করছিলাম তখন, তাই বেশি কথা বলতে পারিনি।

৭ মাসের ফাইজাও এখন পিতৃহারা। এখনো বুঝে উঠতে পারছে না বাবার শূন্যতা। নিখোঁজ স্বজনদের সন্ধানে সেখানে ভিড় জমিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। শুরুতে তারা চেয়েছিলেন অন্তত আহত অবস্থায় কোথাও পাওয়া যায় কী না। আর এখন চান অন্তত মরদেহটা বুঝে নিতে। মাত্র ২০ গজ দূরেই পড়ে আছে শনাক্ত না হওয়া মরদেহগুলো। জানা গেছে, মরদেহের নমুনার সাথে ডিএনএ প্রোফাইলিং করে ফল পেতে লেগে যাবে ১ মাস!

এ ব্যাপারে সিআইডি’র বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, অশনাক্তকৃত লাশের ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের জন্য যেসব হাড় বা দাঁতের মাড়ি আমরা সংগ্রহ করছি সেগুলোর প্রোফাইলিংয়ের জন্য আমাদের ন্যুনতম একমাস সময় লাগবে।

কন্টেইনার বিস্ফোরণে আহত ২১০ জনকে আনা হয়েছিল চট্টগ্রাম মেডিকেলে। এখন চিকিৎসাধীন ১০২। ইন্টেনসিভ কেয়ারে থাকা ১৫ জনের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেনসহ ৩ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি দগ্ধদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা দেখেন। অতিরিক্ত মানুষের ভিড় দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ডা. সেন। ডা. সেন বলেন, দ্রুত ঢাকায় নিতে হবে তাদের। তিনি বলেন, আপনারা হাসপাতালে ভিড় করবেন না। বাংলাদেশে বার্নের রোগীরা মারা যায় একটা মাত্র কারণে, সেটা হলো ইনফেকশন। ইনফেকশন একবার হলে এই রোগীকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।

রোববার (৬ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেন, এখনও অনেকে নিখোঁজ। আগুনও পুরোপুরি নেভেনি। হতাহতের ঘটনায় কারো অবহেলা থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থার কথা জানান মন্ত্রী। সীতাকুণ্ড ট্রাজেডিতে আহত ১৩০ জন সারাদেশের ৪টি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । বেশীরভাগই সুস্থ হয়ে উঠলেও থেকে যাবে নিঃশ্বাসের কষ্ট।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply