যে আনহেল ডি মারিয়ার পায়ে রিয়াল মাদ্রিদে এসেছিল অতিকাঙ্ক্ষিত লা দেসিমা, সেই খেলোয়াড়ের সাথেই এখন শোনা যাচ্ছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনায় নাম! রিয়াল কিংবদন্তির অংশ হয়ে যাওয়া আর্জেন্টাইন উইঙ্গার ডি মারিয়া যোগ দিতে পারেন কাতালান শিবিরে। রোনালদো, লুইস ফিগো, লুইস এনরিকে, স্যামুয়েল ইতো, হাভিয়ের স্যাভিওলাদের পর এবার রিয়াল-বার্সা দুই ক্লাবেই খেলা ফুটবলারদের ছোট্ট তালিকায় আসতে পারে ডি মারিয়ার নামও। এ নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে রেলেভো, মুন্ডো দেপোর্তিভো ও বার্সা ইউনিভার্স।
পিএসজিতে ডি মারিয়ার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে ৩০ জুন। তারপরই ফ্রি এজেন্ট হয়ে যাবেন ৩৪ বছর বয়সী এই উইঙ্গার। পায়ের ছন্দে যে মরচে পড়েনি, সেটাও নিয়মিতই দেখিয়ে যাচ্ছেন ডি মারিয়া। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ১ বছরের সময়কাল বাদ দিলে লা লিগা ও লিগ ওয়ানে প্রমাণিত এই পারফর্মার সাফল্য পেয়েছেন সর্বত্র। তারকায় ঠাসা পিএসজির প্রথম একাদশে নিয়মিত সুযোগ না পেলেও শেষ মৌসুমে ৩১ ম্যাচে ১৪ গোলে অবদান রেখেছেন তিনি।
ডি মারিয়াকে দলে ভেড়াতে আগ্রহী ইতালিয়ান জায়ান্ট য়্যুভেন্টাসও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে দুই বছরের আকর্ষণীয় চুক্তিও তৈরি করে ফেলেছে বলে বার্সা ইউনিভার্স জানিয়েছে। তবে ডি মারিয়া যে স্পেনে ফিরতেই বেশি আগ্রহী, এমন কথাও শোনা গিয়েছে একাধিক সূত্রে। ডি মারিয়ার এই আগ্রহের সাথে একই বিন্দুতে মিলে গেছে আক্রমণভাগ নিয়ে কিছুটা ভারসাম্যহীন জাভির বার্সেলোনা। কাতালান জায়ান্টরাও ডি মারিয়াকে সম্ভাব্য সাইনিং হিসেবেই দেখছে। কারণ, রাইট উইঙ্গার ওসমান ডেমবেলেকে বিদায় জানানোর জন্য অনেকটাই প্রস্তুত বার্সা। তার জায়গায় লিডস ইউনাইটেডের রাফিনহাকে দলে ভেড়ানোর চিন্তায় বাধ সেধেছে ট্রান্সফার ফি। তাই ফ্রি এজেন্ট হিসেবে লা লিগায় ৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আনহেল ডি মারিয়ার মানের খেলোয়াড়কে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে পেলে নিশ্চয়ই রাফিনহার কথা ভুলে যাবে হুয়ান লাপোর্তা।
শোনা যাচ্ছে, এ পর্যন্ত ইতিবাচক আলোচনাই হয়েছে ডি মারিয়া ও বার্সেলোনার। ২০২৩ সালে আর্জেন্টিনায় ফিরে রোজারিও সেন্ট্রালে খেলবেন বলে জানিয়েছিলেন এই উইঙ্গার। তাই প্রাথমিকভাবে হতে পারে ১ বছরের চুক্তি। তবে সেজন্যও ওয়েজ বিলের হিসেব পরিষ্কার করা ও জায়গা খালি করতে খেলোয়াড় বিক্রির কথা ভাবতে হতে পারে বার্সাকে।
‘ফেনোমেনন’ রোনালদো বার্সায় এক মৌসুম খেলে ইতালি ঘুরে যোগ দিয়েছিলেন লস ব্লাঙ্কোস শিবিরে। মাদ্রিদের জার্সিতে ৩ ম্যাচ খেলা ক্যামেরুনের ফরোয়ার্ড স্যামুয়েল ইতো বার্সায় এসে হয়েছেন কিংবদন্তি। হাভিয়ের স্যাভিওলা বার্সায় তেমন সাফল্য পাননি বলে তার রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেয়া নিয়ে সে সময় হয়নি তেমন কোনো বিতর্ক। তবে লুইস ফিগোর দলবদল পরিণত হয়েছে দুই ক্লাবের শতাব্দী প্রাচীন প্রতিদ্বন্দ্বিতার স্মারকে। এল ক্লাসিকোতে সাদা জার্সি গায়ে ন্যু ক্যাম্পে ফিগোর প্রত্যাবর্তন জন্ম দিয়েছিল কয়েক প্রস্থের নাটকীয়তা। মাঠে সাদা রুমাল ছুঁড়ে কাতালান সমর্থকেরা অনেকটা ষাঁড়ের লড়াইয়ে ব্যবহৃত বার্তা দিয়েছিল, ফিগোর মৃত্যু চায় তারা! কর্নার ফ্ল্যাগের কাছে শুকরের মাথা ছুঁড়ে ফেলার ঘটনা জায়গা করে নিয়েছে লা লিগা, রিয়াল-বার্সা ও ফিগোর সমন্বিত ইতিহাসে।
রিয়াল মাদ্রিদের লা দেসিমা এসেছিল যে আনহেল ডি মারিয়ার পা থেকে, সেই কিংবদন্তির অংশ হয়ে যাওয়া ফুটবলারকে প্রতিপক্ষ শিবিরে দেখার জন্য তাই কতটুকু প্রস্তুত মাদ্রিদিস্তারা; সম্ভাব্য দলবদলের সামনে দাঁড়িয়ে এমন শঙ্কাযুক্ত প্রশ্নের উত্তর হয়তো খুঁজছে ফুটবলের মনযোগী দর্শকেরা।
আরও পড়ুন: ‘লিওনেল মেসিকে ব্যাখ্যা করার মতো নতুন কোনো শব্দ নেই’
/এম ই
Leave a reply