পাচারের টাকা বৈধ করার প্রস্তাব ডলারের যোগান বাড়াবে?

|

কর দেয়ার মাধ্যমে দেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া টাকা বৈধ করার সুযোগ রাখা হয়েছে এবারের বাজেটে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, প্রস্তাবিত বিধান অনুযায়ী বিদেশে অবস্থিত যে কোনো সম্পদের ওপর কর পরিশোধ করা হলে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ যে কোনো কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করবে না। তবে বিদেশে পাচার করা টাকা দেশে পাঠালে আপাতত কিছু না বলা হলেও তাদের নামগুলো পাচারকারীর তালিকায় থেকে যাবে, ফলে ভবিষ্যতে তাদের মনিটর করা হতে পারে, এমন ভয়ে কেউ পাচার করা টাকা দেশে পাঠাবে না বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বিধান কার্যকর হলে অর্থনীতির মূলস্রোতে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে, আয়কর রাজস্ব আহরণ বাড়বে আর করদাতারাও বিদেশে অর্জিত অর্থ-সম্পদ আয়কর রিটার্নে প্রদর্শনের সুযোগ পেয়ে স্বস্তিবোধ করবেন। তবে বৈদেশিক মুদ্রার যোগান বাড়াতে এ উদ্যোগ কোনো ভূমিকা রাখবে না বলে মন্তব্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নরের। এ নিয়ে যমুনা নিউজের বাজেট পর্যালোচনা সংক্রান্ত আলোচনায় তিনি বলেন, পাচার করা টাকা কর দিয়ে বৈধ করার প্রস্তাব কোনো কাজেই আসবে না। ডলারের দাম তো বাড়ছে, ফলে যারা বিদেশে অর্থ পাচার করেছে তারা সেটি ফিরিয়ে দেয়ার বদলে হোল্ড করবে। এটাই স্বাভাবিক। অতএব, টাকা পাচার যেন বন্ধ হয় এমন উদ্যোগ নেয়া উচিত। পাচারকারীদের ধরে দৃশ্যমান আইনি ও প্রশাসনিক পদেক্ষপ নেয়ার কোনো বিকল্প নেই। প্রকৃতপক্ষেই সমস্যাটির সমাধান চাইলে কালো টাকা উৎপাদনের পদ্ধতিটি বন্ধ করার পরামর্শ তার। এ ধরনের উদ্যোগকে নেতিবাচক প্রণোদনা বলে মন্তব্য করেন সালেহউদ্দিন আহমেদ।

বিদেশে অর্জিত স্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে এর ওপর ১৫ শতাংশ, বিদেশে থাকা অস্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে ১০ শতাংশ ও বাংলাদেশে পাঠানো নগদ অর্থের ওপর ৭ শতাংশ হারে করারোপের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। এ প্রস্তাব বা সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক মনে করছেন না বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। এ অর্থনীতিবিদ বলেন, রাজস্ব আদায় এবং ডলারের যোগান বাড়ানোর উদ্দেশ্যে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার। তবে পাচার করা টাকা বৈধ বানানোর এ সুযোগ একটি অনৈতিক দৃষ্টান্ত তৈরি করবে। এছাড়া ব্যাপারটি রাজস্ব আদায় এবং ডলারের যোগানের ক্ষেত্রে আশানুরূপ কোনো ফল দেবে না বলেই মনে করেন তিনিও। তার মতে, এই স্কিমের মাধ্যমে আমরা কাউকে অর্থপাচারে উৎসাহিত করছি কিনা, এমন প্রশ্ন তৈরি হতে পারে।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply