পদ্মাসেতু চালুর খবরে দুশ্চিন্তা দূর হয়েছে খুলনা অঞ্চলের মানুষের

|

ফাইল ছবি

খুলনা ব্যুরো:

দেশের রফতানি আয়ের বড় একটি যোগান আসে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে। চিংড়ি, সাদা মাছ, কাঁচা পাট, পাট জাতীয় পণ্যের পাশাপাশি সবজি রফতানির ক্ষেত্রে যে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয় তার অন্যতম দাবিদার এই অঞ্চলের কৃষক-শ্রমিক। তবে মাওয়া ও পাটুরিয়া দিয়ে রফতানিযোগ্য ও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রির জন্য এসব পণ্য রাজধানীতে নিতে এতোদিন বেশ ধকল পোহাতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের। পদ্মাসেতু চালুর খবরে দুশ্চিন্তা দূর হয়েছে তাদের।

রূই, কাতল, ভেঁটকি, পাঙ্গাস, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষে সুখ্যাত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল। খুলনা বিভাগীয় মৎস্য অধিদফতরের হিসাবে, খুলনা ছাড়াও বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলা থেকে প্রতিদিন প্রায় ১৬০ মেট্রিক টন সাদা মাছ রাজধানীতে যায়। যার পুরোটাই মাওয়া ও পাটুরিয়া ঘাট হয়ে।

সাদা মাছ ছাড়াও রফতানিযোগ্য মোট চিংড়ির দশ শতাংশ চট্টগ্রামের বিভিন্ন মোকামে যায় এই দুই নৌরুটে। কিন্তু ঘাটে যানজট, ফেরির স্বল্পতা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন কারণে সময়মতো মাছ পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পদ্মাসেতু উদ্বোধন হলে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। দ্রুততম সময়ে পৌঁছানো যাবে পচনশীল পণ্য।

খুলনা চিংড়ি বণিক সমিতির সভাপতি শেখ আবু জাফর বলেন, পদ্মাসেতু হওয়ায় এখন কোথাও অপেক্ষা করতে হবে না। সরাসরি পণ্য চলে যাবে।

কাঁচা পাট ও পাট জাতীয় পণ্য বিক্রি করে যে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়, এর বড় একটি অংশই এই অঞ্চলের। পাট ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজেএ বলছে, পদ্মাসেতু চালু হলে সরাসরি মোংলা পোর্ট ব্যবহার করে আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যাবে।

বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ সৈয়দ আলী বলেন, পদ্মাসেতু হওয়ায় রফতানি কার্যক্রম বৃদ্ধি পাবে।

দক্ষিণাঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক ভর্তি কাঁচা সবজি যাচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বিভাগীয় কৃষি অধিদফতরের নথিতে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা থেকে প্রতিদিন ৬শ’ মেট্রিক টন কৃষিপণ্য রাজধানীতে যায়। ব্যবসায়ীরা মনে করেন, পদ্মাসেতু চালুর পর কৃষিপণ্য বিক্রিতে আর মধ্যস্বত্তভোগীরা সুবিধা নিতে পারবে না। পাশাপাশি এ অঞ্চলে শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে মৃত শিল্প নগরীর পুনর্জাগরণ হবে।

খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্টিজের সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস বলেন, আগামীতে দেখা যাবে, খুলনায় বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান হচ্ছে।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ স্বপ্ন দেখেন, পদ্মা সেতু চালু হলে ঘুচবে বেকারত্ব। কাজের সন্ধানে যারা এ ঘর ছেড়েছেন, তারা ফিরে আসবেন নিজ ঠিকানায়।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply