গাইবান্ধার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি ৪০ হাজার মানুষ

|

একাধিক বিদ্যালয়েও বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে।

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

বৃষ্টি ও উজানের ঢলে গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত জেলার সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ২০টি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার ১০ হাজার পরিবারের অন্তত ৪০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

পানিতে তলিয়ে গেছে শতশত বিঘা জমির পাট, বাদাম, তিল ও কাউনসহ বিভিন্ন শাকসবজির ক্ষেত। তবে কী পরিমাণ জমির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার কোনো তথ্য নেই জেলার কৃষি বিভাগের কাছে। এছাড়া পানি ওঠায় পাঠদান বন্ধ করা হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

বাড়িঘরে পানি উঠায় অনেক পরিবার তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিচ্ছে। এরইমধ্যে সরকারিভাবে খোলা সদরে ২টি ও সাঘাটা উপজেলার ১টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৪০০ এরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় অনেক এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বরত অপারেটর খায়নুর নাহার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ঘাঘট নদীর পানি শহর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ও যমুনার পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তা ও করতোয়ার পানি এখনও নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে, ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে হওয়ায় শহর রক্ষা বাঁধের কয়েকটি জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ রূপ ধারণ করেছে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সদর উপজেলার বাগুড়িয়া থেকে কামারজানি পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বেশ কিছু জায়গা। এরইমধ্যে পানির চাপে সাঘাটা উপজেলার দক্ষিণ উল্যা গ্রামে শ্মশানঘাট সড়কের বেশিরভাগ অংশ ভেঙে গেছে। ফলে আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এছাড়া পানি বৃদ্ধির সঙ্গে চার উপজেলার নদীর তীরবর্তী অন্তত ২০টি পয়েন্টে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে এরইমধ্যে বিলীন হয়েছে কয়েকশ’ বাড়িঘর, গাছপালা ও ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

এদিকে, বন্যা মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এস. এম. ফয়েজ উদ্দিন। তিনি জানান, চার উপজেলার বন্যাদূর্গত মানুষের জন্য ৮০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তালিকা করে এসব চাল বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইউএনওদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া ৮ হাজার শুকনা খাবারের প্যাকেট মজুদের পাশাপাশি ৪০০ এর বেশি তাবু, স্থায়ী ১০টিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র, মেডিকেল টিম এবং বেশ কিছু নৌকা প্রস্তুত রাখার কথাও জানান তিনি।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply