সমাহিত হলো কঙ্গোর জাতীয় বীরের একমাত্র স্মৃতিচিহ্ন। দীর্ঘ ৬১ বছর পর কঙ্গোর প্রথম প্রধানমন্ত্রী প্যাট্রিস লুমুম্বার দাঁত ফেরত পেলেন দেশটির জনতা। এতদিন যা রক্ষিত ছিল বেলজিয়ামের কাছে। মধ্য আফ্রিকার দেশটির স্বাধীনতাকামী এ নেতার মরদেহ হত্যার পর এসিডে পুড়িয়ে ফেলা হয় বলে জানা যায়। তাই একটি দাঁত ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট ছিলো না তার।
তিনদিনের শোক পালন শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কঙ্গোতে দাফন করা হলো সোনায় মোড়ানো একটি দাঁত। তবে, কঙ্গোবাসীর কাছে এটি শুধুই একটি দাঁত নয়, যেন তাদের স্বাধীনতার প্রতীক। দেশটির জাতীয় বীর প্যাট্রিস লুমুম্বারের একমাত্র এবং শেষ স্মৃতিচিহ্ন এটি। এ দাঁত পেতে তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ ৬১ বছর। কয়েক দশকের আইনি লড়াই শেষে গত সপ্তাহে বেলজিয়াম ফেরত দেয় কঙ্গোর জাতীয় বীরের শেষ স্মৃতিচিহ্নটি।
১৯৬০ সালে ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে মাত্র ৩৪ বছরে কঙ্গোর প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন লুমুম্বা। তবে, কয়েকমাস পরই সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারান তিনি। এরপর, ১৯৬১ সালে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে দুই সঙ্গীসহ খুন হন এ নেতা। যাতে কোনো স্মৃতিচিহ্ন না থাকে তাই তার মরদেহ অ্যাসিডে পুড়িয়ে ফেলা হয়। সেখানে উপস্থিত থাকা বেলজিয়ামের এক পুলিশ কর্মকর্তা লুমুম্বার একটি দাঁত সরিয়ে নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন।
দেশটির রাজধানী কিনশাসায় লুমুম্বার সম্মানে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। সেখানেই সমাহিত করার আগে শেষকৃত্যে হাজার হাজার মানুষ জানান শ্রদ্ধা।
কঙ্গোর বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স সিসেকেদি বলেন, অবশেষে আমাদের নায়ক লুমুম্বা বিশ্বব্যাপী আরও বেশি পরিচিতি পাবে। আপনাদের প্রতি আমার আহ্বান, দেশের সাথে কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করবেন না। দেশের উন্নয়নের জন্য, শান্তির জন্য কাজ করুন। এই মানুষটি আমাদের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন। আমরা যারা এখনও বেঁচে আছি তাদের উচিত দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
প্যাট্রিস লুমুম্বার মেয়ে জুলিয়ানা লুমুম্বা জানান, আমরা খুবই খুশি। ৬১ বছর পর হলেও এখন বলতে পারছি যে বাবা বাড়ি ফিরেছেন। আমার ধারণা, কঙ্গোবাসীও খুশি। ৬১ বছর অনেক দীর্ঘ একটা সময়।
প্রসঙ্গত, লুমুম্বার হত্যাকাণ্ডের সাথে যুক্তরাষ্ট্র ও বেলজিয়ামের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ইতিহাসবিদদের ধারণা, তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলায় ঘটানো হয়েছে এ হত্যাকাণ্ড।
/এসএইচ
Leave a reply