স্টাফ করেসপনডেন্ট, টাঙ্গাইল:
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে শুক্রবার (৮ জুলাই) ভোর থেকে তীব্র যানজট। এই সুযোগে যখন মহাসড়কের আশে পাশের অস্থায়ী হকাররা ১৫ টাকার পানি ২০/২৫ টাকা বিক্রি করছে ঠিক তখন যানজটে আটকে থাকা তৃষ্ণার্ত ঘরমুখো মানুষকে বিনা টাকায় পানি সরবরাহ করতে দেখা যায় এক দল যুবকদের। পানি পেয়ে তা পান করে ঘরমুখো মানুষরা তাদের জন্য মন থেকে দোয়া করছে।
এমন ঘটনা ঘটেছে মহাসড়কের টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার মিরহামজানি গ্রামে। ওই গ্রামের বেল্লাল হোসেন, লাল মিয়া, সেলিম, ফরিদসহ যুবকরা শনিবার (৯ জুলাই) সকাল থেকে প্রচণ্ড গরমে হাজার হাজার মানুষের মাঝে পানি সরবরার করছে। আশে পাশের গ্রামের বৃদ্ধ নারীরা বিনা টাকায় পানি ও গাছের বিভিন্ন ফল সরবরাহ করছে।
শুক্রবার ভোর রাতে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তের পিলারের কাছে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট টোল আদায় বন্ধ রাখে সেতু কর্তৃপক্ষ। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। শনিবার সকাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পার থেকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা বৃদ্ধির সাথে সাথে তা কমে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে সদর উপজেলার রাবনা পর্যন্ত প্রায় ২৩ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট রয়েছে। .
এ সুযোগে মহাসড়কের স্থায়ী হকাররা পানির দাম প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়াও খোলা পানি ৫/১০ টাকা গ্লাস বিক্রি করছে। তখনই মিরহামজানি গ্রামের বেশ কয়েকজন যুবক পাশ্ববর্তী মাদ্রাসার মোটর থেকে পানি এনে ঘরমুখো মানুষের মাঝে বিনা পয়সায় বিতরণ করছে।
নাটোরের কুরবান আলী বলেন, রাবনা এলাকায় তিন গ্লাস পানি ২০ টাকা দিয়ে কিনে খেয়েছি। অথচ একই জেলার কালিহাতীতে বিনা টাকায় এক বোতল পানি পেয়েছি। এতে করে আমার মতো শত শত ঘরমুখো মানুষের উপকার হয়েছে। যারা এই মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তাদের জন্য দোয়া রইলো।
কুষ্টিয়ার গোপাল মিয়া বলেন, টাঙ্গাইল যানজটে পড়ে আধা লিটার ফ্রেশ পানি ২৫ টাকা দিয়ে কিনে খেয়েছি। এখানে এসে দেড় লিটার পানি ফ্রিতে পেয়েছি। যানজটে আটকে থেকে দুর্ভোগ হলেও পানি সরবরাহ দেখে আমার খুবই ভাল লাগছে।
দিনাজপুরের ট্রাক চালক আলী আজম বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গাড়ি চালাই। কিন্তু যানজটে পড়লেও কাউকে কখনও ফ্রিতে পানি সরবরাহ করতে দেখিনি। তাদের পানি পান করে আমি খুবই আনন্দিত। তাদের এমন উদ্যোগ অবশ্যই মহৎ একটি উদ্যোগ।
স্বেচ্ছাসেবক নওশাদ রানা সানভী, রনি, বেল্লাল হোসেন, লাল মিয়া, সেলিম ও ফরিদ বলেন, যানজটে আটকা মানুষের সাথে অনেকেই সুযোগে সৎ ব্যবহার করছে। তাই আমরা যুবকরা উদ্যোগ নিয়ে মাদ্রাসা থেকে পাইপ লাইন এনে পানি সরবরাহ করছি। সকাল থেকে শুরু করেছি। ঘরমুখো অনেকের কাছেই খালি বোতল আছে। তাদের বোতলেই পানি ভর্তি করে দিচ্ছি। যতক্ষণ যানজট আছে ততক্ষণ পানি সরবরাহ করবো।
Leave a reply