প্রথা ভেঙে কনেযাত্রী এলেন বরের বাড়িতে

|

আলোচিত নবদম্পতি ই‌তি সে‌লিনা ও এম এ মা‌লেক শান্ত।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

সমাজে বিয়ের যে প্রচলিত প্রথা রয়েছে সম্প্রতি সেটি ভেঙে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন সাতক্ষীরার সদ্য বিবাহিত এক দম্পতি।

বুধবার (১৩ জুলাই) বিকেল ৪টায় ঝিনাইদ‌হের শৈলকুপা উপ‌জেলার মনোহরপুর গ্রামে অনু‌ষ্ঠিত হয় এই প্রথা ভাঙার বিয়ে। বাংলাদেশের চিরাচরিত নিয়মানুযায়ী বর তার আত্মীয়-স্বজনসহ সহযাত্রীদের নিয়ে কনের বাড়ি যান বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে। এরপর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে কনের বাড়ি থেকে কনেকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন।

কিন্তু ঝিনাইদ‌হের শৈলকুপা উপজেলা প‌রিষ‌দের আবাসিক এলাকার আব্দুল কা‌দে‌রের মেয়ে ই‌তি সে‌লিনার ক্ষেত্রে ঘটনাটি উল্টো হয়েছে। তিনি তার সহযাত্রীদের নিয়ে একই উপ‌জেলার ম‌নোহরপুর গ্রামের সামসু‌দ্দিন লস্ক‌রের পুত্র দীপ্ত টি‌ভির সাংবা‌দিক এম এ মা‌লেক শান্তর বাড়িতে গিয়ে হাজির হন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, প্রথাগতভাবে বিয়ের অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশমুখে যেভাবে বরকে বরণ করা হয়, তেমনি এ বিয়েতে কনেকে ফুলের মালা পরিয়ে, মিষ্টি খাইয়ে বরণ করে নেন বরপক্ষের আত্মীয়রা। এরপর বর-কনে নির্ধারিত আসনে বসে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। এ সময় কনে পক্ষের অতিথিদের আপ্যায়ন করা‌নো হয়। বিয়ের পর ক‌নে থে‌কে যান বরের বাড়িতে।

ব্যতিক্রর্মী এ বিয়ের অনুষ্ঠানকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে উৎসাহের কোনো কমতি ছিল না। বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে বরের বাড়িতে যেমন উৎসাহী জনতার ভিড় ছিল তেমনি কনের বাসাতেও অনেক মানুষ জড়ো হন।

জানা গেছে, এমন বিয়ের প্রস্তাবটি আসে মূলত বর শান্তর পক্ষ থে‌কে। তারা চেয়েছেন এ বিয়ের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করার একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে।

এ ব্যাপারে কনে সে‌লিনা ব‌লেন, ছেলেরা যদি পারে মেয়েদেরকে বিয়ে করে নিয়ে আসতে তাহলে মেয়েরা কেনো পারবে না। নতুন সিস্টেমে বিয়ে করতে পেরে আমি অনেক খুশি। প্রথমে ভেবেছিলাম এভাবে বিয়ে করবো, ঠিক হবে কিনা, কিন্তু পরে আমি রাজি হই। প্রথা ভেঙে এভাবে বিয়ে এর আগে আর কেউ করেনি। বিয়েতে এজন্য অনেক আনন্দ হয়েছে। শুরুতে দুই পরিবারের আত্মীয়-স্বজন এবং পাড়া-
প্রতিবেশী আপত্তি জানালেও পরে তারা রাজি হন এবং সাদরেই এ প্রস্তাব গ্রহণ করেন।

বর এম এ মা‌লেক শান্ত জানান, পুরুষশাসিত সমাজে নারী পুরুষের সমান অধিকারের বহিঃপ্রকাশে এ প্রথা ভেঙে বিয়ে করার বিষয়টি প্রতীকী। এখন থেকে আমাদের দেখাদেখি অনেকেই এমনভাবে বিয়ে করতে উৎসাহ পাবে। এবং সমাজও তাদের প্রথা পরিবর্তন করতে বাধ্য হবে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply