ফরিদপুরে পাওনা টাকা না পেয়ে গায়ে পেট্রোল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা স্বর্ণ ব্যবসায়ীর

|

ফরিদপুর প্রতিনিধি:

ফরিদপুরে স্বর্ণ বিক্রির পাওনা টাকা না পেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী। সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেলে জেলার ডিসি অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সেখানে বৃক্ষরোপণ অভিযান শুরুর র‍্যালির প্রস্তুতি চলছিল বলে জানা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বৃক্ষ মেলা উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি র‍্যালি বের করা হয়। ঠিক তার আগমুহূর্তে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশেই শরীরে পেট্রোল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করে স্বর্ণ ব্যবসায়ী গৌড়াঙ্গ কর্মকার। পরে র‍্যালিতে উপস্থিত থাকা বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী, স্কাউট সদস্য ও স্থানীয় জনতার সহযোগিতায় ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ সময় ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। উদ্ধারকৃত ওই চিরকুটটি ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র বরাবর লেখা খোলা চিঠি।

উদ্ধারকৃত চিরকুট সূত্রে জানা যায়, স্বর্ণ ব্যবসায়ী গৌড়াঙ্গ কর্মকার ও তার অন্য প্রতিবন্ধী ভাই শহরের নিলটুলিতে নয়ন জুয়েলার্স নামক একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। গত ২৫ বছর ধরে ওই দুই প্রতিবন্ধী ভাই স্বর্ণ মজুদের ব্যবসা করে আসছেন। করোনাকালীন সময়ে দোকান বন্ধ থাকায় তারা স্বর্ণ বিক্রি করে টাকা ব্যাংকে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এটা জানতে পেরে পার্শ্ববর্তী পূর্ণ জুয়েলার্সের মালিক অয়ন কর্মকার সুমন ও তার পিতা সুধির কর্মকার মিলে ভরি প্রতি ২০০ টাকা বেশি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ২৪ ক্যারেটের মোট ২৪০ ভরি ওজনের স্বর্ণ নেয়। এই স্বর্ণ দেয়ার পরেই টাকা চাইতে গেলে দুই প্রতিবন্ধী স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের কোনো টাকা বা স্বর্ণ না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা করতে থাকে অয়ন কর্মকার। এছাড়া স্বর্ণ বা টাকা না দিয়ে দুই প্রতিবন্ধী ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন হুমকি দিতে থাকে।

আরও জানা যায়, গেল ২৫ মে প্রতিবন্ধী গৌড়াঙ্গকে অয়ন কর্মকার বাসায় ডেকে নিয়ে বিভিন্ন অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে মারার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন কাগজপত্রে সই করতে বাধ্য করে। যার কারণে তিনি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন।

এ ব্যপারে পূর্ণ জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী, অভিযুক্ত অয়ন কর্মকার সুমনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, এ বিষয়ে লিখিত কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। তবে অন্য সোর্সে খবরটি জানতে পেরেছি। আমরা আত্মহত্যার চেষ্টাকারী ওই লোকের সন্ধান করছি। তাকে পেলে জানতে পারবো ঘটনা কী। এছাড়া কেউ যদি পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয় পুলিশ সেটা গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply