প্রশাসনের নীরবতাই প্রশ্রয় দিচ্ছে যৌন হেনস্তাকারীদের, বলছেন চবি শিক্ষার্থীরা

|

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতরে বাইরে ঘটছে একের পর এক যৌন নিপীড়নের ঘটনা। ভুক্তভোগী ছাত্রীরা অভিযোগ দিলেও নিষ্পত্তি হচ্ছে না একটিও। স্বয়ং উপাচার্যের নেতৃত্বাধীন যৌন নিপীড়ন নিরোধ সেলও এক্ষেত্রে অকার্যকর। আর এ নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, প্রশাসন অভিযুক্তদের ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকাতেই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তারা।

গত ১৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনে ধর্ষণচেষ্টার শিকার হন এক ছাত্রী। সাড়ে ৩ মাস পরও শনাক্ত হয়নি অভিযুক্ত দুজন। ৩০ জুন ক্যাম্পাসের গোলচত্বরে দুই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করেন এক অটোরিকশা চালক। একই দিনে ছাত্রলীগ কর্মীর হাতে হেনস্থার শিকার হন আরএ এক ছাত্রী।

গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে দুই ছাত্রীকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের চার কর্মীর বিরুদ্ধে। এর আগে ২০১৮ সালে যৌন হয়রানির শিকার হন দুই ছাত্রী। প্রায় প্রতিটি ঘটনায় ভুক্তভোগীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও তারা কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। সবশেষে গত রোববার রাতে ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠেন তারা। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতির জন্যই নারীরা ক্যাম্পাসে নিরাপদ নন বলে অভিযোগ তাদের।

শিক্ষার্থীরা বলেন, একবার যখন দেখেছে বিচার হয় না, ফলে তারা আবার একই অপকর্ম করার সাহস পায়। ব্যাপারটা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে, মেয়েরা বাইরে বের হলেই তাকে হেনস্তা করাকে তারা নিজেদের অধিকার মনে করে। তাই দুষ্কৃতিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চান তারা।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল গঠিত ৫ সদস্যের যৌন নিপীড়ন নিরোধ সেলের প্রধান স্বয়ং উপাচার্য। এ পর্যন্ত জমা পড়া তিনটি অভিযোগের একটিও নিষ্পত্তি হয়নি। দুবছরের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার সেলের নতুন কমিটিও হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, এ সংক্রান্ত তিনটি কেস পেন্ডিং ছিল। সেগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে। আর বর্তমান কেসটির কাজ রোববার থেকে শুরু হবে। আজকালের মধ্যেই দুষ্কৃতিকারীরা ধরা পড়বে বলে বিশ্বাস তার।

নিপীড়নের ঘটনা বৃদ্ধির জন্য বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে দুষছেন শিক্ষকরাও। অভিযোগগুলোর বিচার দেখতে চান তারা।

সবচেয়ে সাম্প্রতিক ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনাটিতে জড়িত ৫ জনই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলে ধারণা প্রশাসনের। হাটহাজারি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন সবুজ জানিয়েছেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এরই মধ্যে দুজনকে শনাক্ত করা গেছে। অভিযোগটি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply