বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থানে বসা স্কুলছাত্রীকে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ

|

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, রংপুর:

রংপুরের বদরগঞ্জের লোহানি পাড়া ইউনিয়নের মাদাই খামার জেলেপাড়ায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেয়া নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। তার অবস্থানের চার দিন পর শুক্রবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৪ টায় বদরগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে নিয়ে যায়।

বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে এ ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিয়ের দাবিতে অবস্থানে বসা ওই শিক্ষার্থীকে শুক্রবার থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়াও ছেলেপক্ষ এবং মেয়েপক্ষের লোকজনকে থানায় ডাকা হয়েছে। তাদের সাথে কথা বলে ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

অবস্থানে বসা শিক্ষার্থী জানান, সাগর বিশ্বাসের সাথে আমার সাড়ে তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক। এর মধ্যে আমরা স্বামী স্ত্রীর মত মেলামেশা করেছি। কিন্তু সাগর এখন আমাকে ছেড়ে দিনাজপুরের ফুলবাড়ি থানার বেলঘাটা ইউনিয়নে একটি মেয়েকে বিয়ে করতে যায় ২৬ জুলাই সকালে। এটা শুনে আমি তাদের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছি। তরুণী বলেন, শুক্রবার বিকেলে এসে পুলিশ আমার জবানবন্দি নিয়ে আমাকে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে যদি আমার বিয়ের বন্দোবস্ত করা না হয় তাহলে আমি আবারও সাগর বিশ্বাসের বাড়িতে গিয়ে অবস্থানে বসবো।

স্থানীয় সাবেক জনপ্রতিনিধি আইয়ুব আলী জান্তু জানান, গত ২৬ জুলাই মেয়েটি সাগর বিশ্বাস নামের যুবকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করে। কিন্তু এ ঘটনার তিনদিন আগে অন্য এক মেয়ের সাথে সাগরের আশীর্বাদ হয়। যৌতুক বাবদ ১ লাখ ৪০ হাজার এবং স্বর্ণালংকার বাবদ ৫০ হাজার টাকা সাগর বিশ্বাসের পিতাকে বুঝিয়ে দেয় মেয়েপক্ষ। এরই মধ্যে নবম শ্রেণি পড়ুয়া ওই শিক্ষার্থী বিয়ের দাবিতে সাগরের বাড়িতে অবস্থান নেন।

এ খবর জানতে পেরে সাগর বিশ্বাসকে নতুন বিয়ে ঠিক হওয়া তরুণীর পরিবার আটকে রাখে। পরে স্থানীয়ভাবে ২৮ জুলাই বৈঠকে বসে দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ওই মেয়ের পক্ষকে দেয়ার শর্তে ছেলেকে সেখান থেকে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়।

তবে সময়মতো টাকা দিতে না পারায় তারা সাগরকে ছাড়েনি। বরং দেরি হওয়ায় তারা দশ লাখ টাকা দাবি করেছে। বিষয়টি নিয়ে এখন এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় মেয়ে পক্ষ এবং ছেলেপক্ষ উভয়ই থানায় অভিযোগ করেছে। এই প্রেক্ষিতে অবস্থানে বসা শিক্ষার্থীসহ উভয়পক্ষকে থানায় ডেকে নিয়ে গেছে পুলিশ।

অবস্থানে বসা শিক্ষার্থীর জ্যাঠা জানান, যে টাকা ছেলে পক্ষ নিয়েছে সে টাকা তারাই দিতে পারতো। কিন্তু সেটি না করে সেই টাকা আমাদের ওপর চাপানো হয়। আমার ভাই অনেক কষ্ট করে সেই টাকা জোগাড়ও করেন। তবে বিলম্ব হওয়ায় তারা টাকা গ্রহণ করেনি। তখন আমরা থানায় জিডি করতে গেলে ছেলের পরিবার আমাদের মারপিট করে ও সাদা স্ট্যাম্পে সই নেয়ার চেষ্টা করে। এই অবস্থায় আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। বাধ্য হয়ে আমার ভাই শুক্রবার থানায় অভিযোগ করেছেন। আমাদের দাবি সাগর বিশ্বাসের সাথে আমাদের ভাতিজিকে বিয়ে দিতে হবে। তা না হলে এই মেয়েকে নিয়ে আমরা সমাজের কোথায় নিয়ে রাখবো?

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply