বিএনপি-গণঅধিকার পরিষদ সংলাপ: যুগপৎ আন্দোলনের অঙ্গীকার দুই দলের নেতাদের

|

গণঅধিকার পরিষদের সাথে সংলাপে বিএনপি।

দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়; তাই সবার আগে সরকারের পদত্যাগ চায় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদ। এই দাবি আদায়ে যার যার অবস্থান থেকে যুগপৎ আন্দোলন করবে বলে জানান দুই দলের নেতারা।

বুধবার (৩ আগস্ট) রাজধানীর পুরানা পল্টনে গণঅধিকার পরিষদের সাথে সংলাপ শেষে দুই দলের নেতারা বলেন, নিরপেক্ষ সরকার প্রশ্নে কোনো আপোষ নয়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দিদের মুক্তির ব্যাপারে একমত হয়েছে বলে জানান দুই দলের নেতারা।

সরকারবিরোধী ঐক্যকে সুসংহত করতে ২৪ মে থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে বিএনপি। সেই ধারাবাহিকতায় বুধবার দুপুরে মতবিনিয়ম করে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে। বিএনপি ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গণঅধিকারের পক্ষে দলের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার সঙ্গে ছিলেন আলোচিত তরুণ নেতা নূরুল হক নূর।

প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন দুই দলের নেতারা। তারা জানান, দলীয় সরকারের অধীনে ভোটে যাবে না তাদের দল। নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠায় যুগপৎ আন্দোলনে একমত তারা। গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই আমাদের। আর আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয় বলে আমরা মনে করি না। এ ব্যাপারে এটাই আমাদের ঘোষণা।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা এই বিষয়ে একমত হয়েছি যে, এই সরকারকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেয়া যায় না। এই সরকারকে সরানোর জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ একটা আন্দোলনের ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি। আমরা একমত হয়েছি যে, এই আন্দোলন আমরা যুগপৎভাবে করবো।

তবে, কিছুটা মতবিরোধ আছে জাতীয় সরকার নিয়ে। কারণ, বিএনপি চায় নির্বাচনে জয়ী হলে সমমনাদের নিয়ে জাতীয় সরকার। আর সব রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচনের আগে জাতীয় সরকার চায় গণঅধিকার পরিষদ।

গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নূরুল হক নূর বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা, সংসদ বিলুপ্ত করা, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা আমাদের দাবি। যারা বর্তমান সরকারকে পরিবর্তনের লক্ষ্যে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করছে, তাদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন আয়োজন করা এবং সেই সরকার গঠনের পরেই আমরা রাষ্ট্র মেরামতের জন্য সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকারের মতো একটি সরকার গঠন করবো। এই বিষয়টা এখনও আলোচনার মধ্যে আছে এবং যে বিষয়গুলো আমরা মনে করি পরিবর্তন ও সংস্কার হওয়া দরকার, সে সব বিষয় মেরামতের ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এ পর্যন্ত ২১ টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে বিএনপি। দিনক্ষণ চূড়ান্ত না হলেও, সামনে বামপন্থী আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে মত বিনিময়ের পরিকল্পনা রয়েছে দলটি।

আরও পড়ুন: বিএনপির হুমকি ধামকি যতটা গর্জে বাস্তবে ততটা বর্ষে না: কাদের

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply