শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব: বঙ্গবন্ধুর জীবনে রেখেছেন অনন্য ভূমিকা

|

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব; ৬ দফা আন্দোলন কিংবা ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, সব কিছুতেই আড়ালে থেকে বাঙালির মুক্তির সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী হলেও কখনোই বিলাসী জীবনে বিশ্বাসী ছিলেন না; সংকটময় মুহুর্তে দিয়েছেন রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয়। জাতির পিতার রাজনৈতিক জীবনে তাকে অনুসরণ করে উৎসাহ জুগিয়েছেন এই নারী।

আজ সোমবার (৮ আগস্ট) শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী। টুঙ্গিপাড়ার নিভৃত গ্রামের এই রেনুই হয়ে উঠেছিলেন বঙ্গবন্ধুর যুদ্ধদিনের সারথী। মুক্ত মুজিবের চেয়ে কারারুদ্ধ মুজিবের কাছে বেশি অপরিহার্য ছিলেন বঙ্গমাতা। চিঠি কিংবা চিরকুট, কারাগারের ওপার থেকে বঙ্গবন্ধুর দেয়া মুক্তির বার্তা ছড়িয়েছিলেন তিনি।

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, এই সহযোগিতা শুধু বঙ্গবন্ধুকে দেয়ার কথা নয়। এই সহযোগিতা দেশপ্রেমের জায়গা থেকেও দেখতে পারি। কারণ তিনি স্বাধীনতার স্বপ্নকে বঙ্গবন্ধুর মাঝে অনেক বড় করে তুলেছিলেন।

বেগম মুজিব পাকিস্তানি জান্তার রক্তচক্ষুকে উড়িয়ে দিতেন তুড়ি মেরে। ছিলেন বঙ্গবন্ধুর রণকৌশলের অন্যতম পরামর্শক। কারারুদ্ধ বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তির বিরোধিতা করে নিজের লড়াকু মনোভাব বুঝিয়ে দিয়েছেন বেগম মুজিব।

বঙ্গমাতা সম্পর্কে সেলিনা হোসেনের মন্তব্য একজন অসাধারণ নারী হিসেবে তাকে আমি দেখি। যিনি ইতিহাসের জায়গাটা ধারণ করেছে আপন আলয়ে। শুধু স্বামীর চিন্তা থেকে নয়, তার নিজের ভেতরেও স্বাধীনতার স্বপ্ন তাকে অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি সেইভাবে এগিয়েছেন; বাঙালি-বাংলাদেশের পক্ষে।

স্বাধীনতার পর সব পরিচয় ছাপিয়ে তখন তিনি রাষ্ট্রপতির স্ত্রী। কিন্তু সেই ফার্স্ট লেডির তকমা কখনোই গায়ে মাখতে দেননি স্বাধীনতার নেপথ্যের এই কারিগর। ক্ষমতা বা ভোগবিলাস থেকে নিজের সাথে সন্তানদেরও রেখেছেন যোজন-যোজন দূরে।

নির্লোভ, নিদ্দিষ্ট লক্ষ্য আর আর্দশের মিশেলে যে হাজারো বাধা পাড়ি দেয়া যায় অনায়াসে, তার অন্যতম প্রমাণ টুঙ্গীপাড়ার রেনুর জীবন কাহিনি। এই নারীর জীবন নিশ্চয়ই অনুপ্রেরণার খোরাক হবে বর্তমান আর ভবিষ্যত প্রজন্মের নারীদের।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply