কর্মব্যস্ত জীবনে স্বাস্থ্যের যত্ন ভালো করে নেয়ার পরিসর সকলেরই কম। তার ওপর অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, ভুল খাদ্যাভ্যাসের জেরে আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে নানা মারণব্যাধি। কোলন ক্যানসার তার মধ্যে অন্যতম। বৃহদান্ত্রের কোষগুলির বৃদ্ধি অস্বাভাবিক হারে হলে এই অসুখের ছায়া নেমে আসে শরীরে। অন্ত্রে দীর্ঘস্থায়ী কোনো মাংসল অংশের বৃদ্ধি এই রোগের অন্যতম লক্ষণ।
অনিয়ন্ত্রিত মদ্যপান, ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর খাবার ইত্যাদি কারণে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। সাধারণত পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের মধ্যে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকলেও ইদানীং এই প্রবণতা বদলাচ্ছে। কমবয়সীদের জীবনেও এই অসুখ থাবা বসাচ্ছে। তবে কিছু উপসর্গ জানা থাকলে রোগের শুরুতেই চিকিৎসা করানো যায় ও সেরে ওঠার সম্ভাবনা বাড়ে। দেখে নিন কোলন ক্যানসারের সাধারণ উপসর্গগুলি।
কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হতে হবে?
দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা দীর্ঘ দিনের ডায়রিয়া এই দুটির যেকোনো একটি হলে সচেতন হোন। এই ক্যানসারের আক্রমণে তীব্র পেটব্যথা হয়। সঙ্গে হঠাৎ রক্তস্বল্পতাও হানা দিতে পারে। আকস্মিক ওজন কমে যেতে থাকলেও সতর্ক হতে হবে, কোলন ক্যানসারের ক্ষেত্রে এমন উপসর্গ দেখা দেয়। মলত্যাগের সময় খেয়াল রাখুন, মলের সঙ্গে রক্ত বের হলে তা কখনোই অবহেলা করবেন না। যদিও মলের সঙ্গে নানা কারণেই রক্ত বের হতে পারে, কিন্তু সব রকম সাবধানতা নেয়ার পরেও রক্ত বের হওয়া বন্ধ না হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অনেক সময় এই সব উপসর্গের সঙ্গে গা-বমি ভাব যোগ হয়। এছাড়া পেটে অস্বস্তি (গ্যাস, খামচে ধরার মতো পেটে ব্যথা), খিদের বোধ কমে যাওয়া, শারীরিক দুর্বলতা ইত্যাদি উপসর্গও দেখা যেতে পারে।
এই সমস্যা এড়াবেন কীভাবে?
চিকিৎসকদের মতে- স্বাস্থ্যকর খাবার, নিয়মিত শরীরচর্চা, মদ্যপান ও ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ, খাসির মাংস খাওয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ, ঠিক সময় অন্যান্য ক্রনিক অসুখের চিকিৎসা, এসব মূল শারীরিক নিয়মনীতি মেনে চললেই এই অসুখের সম্ভাবনা অনেকটা কমিয়ে আনা যায়। প্রতিদিনের খাবারে পর্যাপ্ত টাটকা ফলমূল, শাকসবজি, ভুষিসহ আটার রুটি, ওটস অমলেট থাকা দরকার। শস্যদানা ও পর্যাপ্ত ফাইবার যুক্ত খাবার খেলে অসুখ আটকে দেয়ার পাশাপাশি কোলন ক্যানসারের রোগীদের বাঁচার মেয়াদ অনেক বেড়ে যায়।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
ইউএইচ/
Leave a reply