ফেলে যাওয়া মরদেহ হয়ে গেলো সড়ক দুর্ঘটনা

|

১৯ আগস্ট, শুক্রবার। সকাল ৬টা ১৪ মিনিট। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রেডিও ভবনের উল্টো দিকের রাস্তায় থামে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা। সেখান থেকে সালোয়ার-কামিজ পরা এক মধ্যবয়সী নারী নামেন হাতে ব্যাগ নিয়ে। সিএনজিচালকও নামেন একইসঙ্গে। দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ কথা বলেন তারা।

ফুটপাত ধরে হাঁটাহাঁটি করে আশপাশের অবস্থা দেখতে থাকেন ওই নারী। এ সময় ফুটপাথ দিয়ে দুই পথচারী হেঁটে যান। তারপর সিএনজি থেকে একজনের দেহ নামাতে দেখা যায় চালককে। মরদেহটি ফুটপাতে রেখেই সিএনজি চালিয়ে চলে যায় চালক। আর ওই নারী অন্যপাশ দিয়ে হেঁটে উধাও হয়ে যায়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা মেলে এসব।
পুলিশের দাবি, ঢাকার আমিনবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের মরদেহ আগারগাঁওয়ে ফেলে যায় তারই পরিচিত এক নারী। লাশ ফেলে যাওয়া নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। আমিনবাজারের মরদেহ আগারগাঁওয়ে আসলো কেন, এ নিয়েই এখন রহস্য।

এদিন ভোরে লাশের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় শনাক্ত করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় হাসপাতালে। পরিচয়ে জানা যায়, নিহত ব্যক্তি ইসমাইল হোসেন। তিনি হানিফ পরিবহনের বাসচালক। থাকেন আমিনবাজারের একটি মেসে। পরিবার থাকে গ্রামের বাড়ি যশোরে। তার ফোন কললিস্টে দেখা যায়, গাবতলী এলাকার এক নারীর সাথে ইসমাইলের সম্পর্ক আছে। শুক্রবার ভোরে ওই নারীর বাসায় আসার সময় আমিনবাজারে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন ইসমাইল। এরপর ঘটে রহস্যজনক ঘটনা।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রুবাইয়াত জামান বলেন, বাস-লেগুনার সংঘর্ষে সড়ক দুর্ঘটনা হয়। লেগুনা চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান। ভুক্তভোগী ইসমাইল গুরুতর আহত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিলেন। দুর্ঘটনার বিষয়টি বুঝতে পেরে তার পূর্ব-পরিচত ব্যক্তি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে ইসমাইল মারা গেলে কোথাও ভর্তি না করে পরবর্তীতে দেহটি বেতার ভবনের সামনে থেকে নামিয়ে তিনি চলে যান।

ইসমাইলকে সিএনজি থেকে ফেলে যাওয়া ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে শেরে বাংলা নগর থানা পুলিশ। পরে তার বক্তব্য শুনে সাভার থানা ও হাইওয়ে থানা পুলিশের দেয়া তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়। পরে ছেড়ে দেয়া হয় ওই নারীকে। এখন পর্যন্ত নিহত ইসমাইল সড়ক দুর্ঘটনাতেই মারা গেছেন বলে নিশ্চিত পুলিশ।

রুবাইয়াত জামান আরও বলেন, ওই মহিলার বক্তব্য আমাদের সন্তোষজনক মনে হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে এটিকে সড়ক দুর্ঘটনা হিসেবে মনে হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে যে আঘাতগুলো রয়েছে, তা দুর্ঘটনাজনিত বলে প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হচ্ছে।

পুলিশ আরও জানায়, তদন্ত শেষ হয়নি। এটি হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকলে তাও খতিয়ে দেখা হবে।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply