নাটোরে শিশুকে সিগারেটের ছেঁকা ও মারপিটের অভিযোগ, এক হাজার টাকায় রফা

|

সিনিয়র করেসপনডেন্ট, নাটোর:

নাটোরের বড়াইগ্রামে ১২ বছর বয়সী এক শিশুকে জ্বলন্ত সিগারেটের ছেঁকা দেয়া ও মারধরের ঘটনা এক হাজার টাকায় মিমাংসার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২০ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে এক হাজার টাকার বিনিময়ে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করা হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে মুদি দোকানদার ইউনুস আলী শিশুটিকে এমন নির্যাতন করেন। শিশুটি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে বাড়িতে রয়েছে।

শিশুটি উপজেলার জোনাইল ইউনিয়নের বোর্ণি গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী সুজন হোসেনের ছেলে। সে স্থানীয় সেন্ট লুইস উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী শিশু জানায়, শুক্রবার সকালে তার এক সহপাঠীকে সে লুকিয়ে ধূমপান করতে দেখে। ওই সহপাঠী তখন বিষয়টি কাউকে না জানাতে তাকে অনুরোধ করে এবং মিষ্টি খাওয়ানোর কথা বলে দুপুরে তার বাবার মুদি দোকানে যেতে বলে। পরে দুপুর ১টার দিকে শিশুটি সহপাঠীর বাবা ইউনুস আলীর মুদি দোকানে যায়। দোকানের ভেতরে বসার কিছুক্ষণের মধ্যেই ইউনুস আলী হঠাৎ তাকে চড় থাপ্পড় মারেন এবং জ্বলন্ত সিগারেট তার ডান হাত চেপে ধরে ছেঁকা দেন।

এ সময় তার চিৎকারে আশপাশ থেকে লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করেন। পরে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। স্থানীয় চিকিৎসক রাসেল হোসেন বলেন, শিশুটির ডান হাতে পোড়া জখম পাওয়া গেছে। পোড়ার ধরন দেখে এটা সিগারেটের ছেঁকা বলে মনে হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় শিশুটির মা জহুরা বেগম ছেলেকে নিয়ে ইউনুস আলীর দোকানে গিয়ে নির্যাতনের কারণ জানতে চান। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডা হলে জহুরা বেগম জোনাইল ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে জানান। পরে শনিবার সকালে চিকিৎসা বাবদ এক হাজার টাকা জরিমানা করে চেয়ারম্যান বিষয়টি নিষ্পত্তি করেন।

জহুরা বেগম বলেন, তার স্বামী মালয়েশিয়া থাকেন। স্বামী বাড়িতে না থাকায় তিনি ছেলেকে নির্যাতনের বিষয় নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা করতে চাননি।

অভিযোগের বিষয়ে মুদি দোকানি ইউনুস আলী বলেন, দোকানের পাশে তার ছেলের সাথে শিশুটির ধাক্কাধাক্কি হচ্ছিল। তিনি তাদের ছাড়াতে গেলে অসাবধানতাবশত তার হাতে থাকা সিগারেট হাতে ঠেকে যায়। এতে তার হাত কিছুটা পুড়ে গেছে। শিশুটিকে ইচ্ছা করে সিগারেটের ছেঁকা দেননি বা মারপিট করেননি বলে দাবি করেন তিনি।

জোনাইল ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, শিশুটির মা আমার কাছে বাদী হওয়ায় দুই পক্ষকে ডেকে একটা সমাধান করে দিয়েছি।

বড়াইগ্রাম থানার ওসি আবু সিদ্দিক বলেন, এ ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। পুলিশ পাঠিয়ে ঘটনা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।

/এনএএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply