শোক দিবসের অনুষ্ঠানের অজুহাতে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে সড়কের গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ

|

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

গাইবান্ধা সাদুল্লাপুরে সরকারি রাস্তার সাতটি ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২১ আগস্ট) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভাতগ্রাম-শেরপুর সড়কের ভাতগ্রাম বাজার সংলগ্ন ও টিয়াগাছা এলাকায় এসব গাছ কাটা হয়। ভাতগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল হাসান সুমনের নেতৃত্বে গাছগুলো কেটে নেয়া হয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

শোক দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করতে এসব গাছ কাটা হয়েছে বলে জানা গেছে। আগামী ২৪ আগস্ট ভাতগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বিষয়টি স্বীকারও করেছেন অভিযুক্ত ভাতগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল হাসান সুমন।

খবর পেয়ে গতকাল বিকেলে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, সড়কের পাশে কেটে নেয়া সাতটি ইউক্যালিপটাস গাছের গোঁড়া পড়ে আছে। এর মধ্যে দুই-তিনটি গাছের গোঁড়া মাটি দিয়ে ঢেকে রাখতে দেখা যায়। কেটে নেয়া এসব গাছের বাজারমূল্য আনুমানিক ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বলে জানা গেছে।

স্থানীয়রা জানান, গাছ কাটার সময় আওয়ামী লীগ নেতা সুমনের সঙ্গে স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী জাহিদুল, অহিদুল ও ঝাড়ুু মিয়া এবং দলের আজাদুলসহ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। গাছ কাটা শেষে শ্রমিকরা সেগুলো ভ্যানে করে সরিয়ে সুমনের স’ মিলে নিয়ে যায়। গাছ কাটার সময় বাধা দিতে চাইলেও ক্ষমতাসীন দলের লোকজন পাহারা দেয়ায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। গাছ কাটার বিষয়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল হাসান সুমনকে জিজ্ঞেস করলে তিনি শোক দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য গাছ কাটার কথা স্বীকার করেন। মুঠোফোনে তিনি বলেন, সড়কের গাছগুলো স্থানীয় সমিতির রোপন করা। দলীয়ভাবে সবার সঙ্গে আলোচনা করে সমিতির লোকজনের কাছে গাছ চেয়ে নেয়া হয়েছে। তবে সাতটি নয়, তিনি একটি গাছ কাটার দাবি করেন।

স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম ও ভুট্টু মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তারা ওই গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত নন বলে জানান। তবে ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম দাবি করেন, শোক দিবসের অনুষ্ঠানের জন্য ওই গাছ আওয়ামী লীগ নেতা সুমন নিজে থেকে কেটে নিয়ে তার স’ মিলে নিয়ে গেছেন।

সড়কের গাছ কাটার বিষয়টি জানা আছে ভাতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহফুজার রহমান মাফু ও ইউপি সদস্য মামুন সরদারের। তারা বলেন, শোক দিবসের অনুষ্ঠানের জন্য গাছগুলো ক্ষমতাসীন দলের লোকজন কেটে নিয়েছে বলে শুনেছি। তবে গাছ কাটার বিষয়ে তাদের সঙ্গে কেউ কথা বলেনি। ইউনিয়ন পরিষদের সড়কে সমিতির মাধ্যমে রোপন করা গাছ অনুমতি ছাড়া অন্য কারও কাটার সুযোগ নেই।

এদিকে, শোক দিবসের অনুষ্ঠানের নামে সড়কের গাছ কাটার ঘটনা দুঃখজনক বলেছেন সাদুল্লাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক সহিদুল্যাহেল কবীর ফারুক। মুঠোফোনে তিনি বলেন, এমন ঘটনা কাম্য নয়। আওয়ামী লীগের পরিচয়ে কেউ এমন ঘটনা ঘটালে তার দায় দল নেবে না। তবে অভিযোগের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনে দায়ীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply