চেয়ারে সুপার গ্লু লাগিয়ে হেনস্থা করা সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এবার থানায় অভিযোগ

|

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে মারপিটের ঘটনার পাঁচদিন পার হলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। ঘটনার সত্যতা পেলেও পুলিশ মামলা নিতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলছেন ওই শিক্ষক। পুলিশ বলছে, শিক্ষকের বিরুদ্ধেও অবিভাবকদের পক্ষ থেকে থানায় একটি পাল্টা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম জানান, ওসি সাহেব জানিয়েছেন আমরা তদন্ত করেছি এবং প্রমাণিত হয়েছে যে আপনাকে মারপিট করা হয়েছে। তবে তারপরও মামলটি রেকর্ড করা সম্ভব হচ্ছে না। আসামিদের তদবির ও একদলীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে মামলাটি রেকর্ড হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। স্কুল ট্রান্সফারের জন্য দুই মাস আগে একসাথে ১৭ জন আবেদন করেছিলাম। সবার ট্রান্সফার হলেও আমার হয়নি। চলতি মাসে ৭ বার স্কুলটি ভিজিট করেছেন টিও তবে কোনো ত্রুটি খুঁজে পাননি। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে টিও আমাকে সাসপেনশনের প্রস্তাব পাঠিয়েছেন ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে। আমি এর সঠিক ও সত্য বিচার দাবি করছি।

এদিকে, প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিজ মিঞা। তিনি বলেন, সাসপেনশনের সুপারিশ করা হয়নি। শিক্ষক আবুল কাশেম যে ঘটনা ঘটিয়েছেন সেটি প্রতিবেদন আকারে ডিডি স্যারের কাছে পাঠানো হয়েছে। অভিভাবকরা মারপিট করেছে এমন ঘটনা ঘটেনি। তবে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ জানান, অভিভাবকদের পক্ষ থেকে শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাল্টা আরেকটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ঘটনাটি শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার পৃথকভাবে তদন্ত করছেন। যেহেতু তদন্ত চলছে সেহেতু এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।

প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের খুলনা বিভাগীয় উপ পরিচালক মো. মোসলেম উদ্দীন বলেন, সাতক্ষীরা শিক্ষা অফিস থেকে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রধান শিক্ষকের কাছে ঘটনার বিবরণ জানতে চাওয়া হবে। সাতক্ষীরার পাঠানো তদন্ত প্রতিবেদনই যে সঠিক এমনটি নয়। প্রকৃত ঘটনা আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি। ঘটনাটি আরও যাচাই করা হবে। মূল ঘটনা আড়াল করে তদন্ত প্রতিবেদন দিলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ আগস্ট আবুল কাশেম পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া সময় বোর্ডে লেখালেখি করছিলেন। সুযোগ বুঝে শিক্ষার্থীরা তার বসার চেয়ারে সুপার গ্লু লাগিয়ে দেয়। তারপর শিক্ষার্থীরা তাকে বসতে বলেন। তিনি বসার পর চেয়ারে প্যান্ট আটকে যায়। এরপর শিক্ষার্থীরা হাসাহাসি শুরু করলে শিক্ষক আবুল কাশেম তাদের চড় মেরে শাসন করেন। ঘটনার পরদিন ২৫ আগস্ট দুপুরে কাশিমাড়ী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকার আলহাজ মুজিবর রহমানের বাড়ির সামনে কয়েকজন অভিভাবক একত্রে প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বেধড়ক মারপিট করে করে আহত করেন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ওই শিক্ষককে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply