কেমো থেরাপিতে ঝরবে না চুল, বিশেষ হেলমেট আবিষ্কার আর্জেন্টিনার নারীর

|

ছবি: সংগৃহীত

ক্যান্সার চিকিৎসায় অন্যতম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া চুল ঝরে যাওয়া। চোখের সামনে নিজের এমন পরিবর্তন মানসিকভাবে আরও বেশি দুর্বল করে তোলে বেশিরভাগ রোগীকে। এই সমস্যা প্রতিকারে এবার বিশেষ এক ধরনের হেলমেট আবিষ্কার করেছেন আর্জেন্টিনার এক নারী। যা কেমোথেরাপি গ্রহণকারী রোগীদের চুল ঝরার সমস্যা রুখে দেয়। আর্জেন্টিনা ছাড়াও বেশ কয়েকটি দেশে এরইমধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই হেলমেট।

ইয়ন নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম দেখায় সাধারণ টুপির মত মনে হলেও এটি মূলত ব্যবহৃত হয় ক্যান্সার চিকিৎসায়। কেমোথেরাপি নিচ্ছেন এমন রোগীদের চুল ঝরা রুখে দেয় হেলমেটটি। ৫৪ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন নারী, পাউলো এসত্রাদার এই আবিষ্কার তাক লাগাচ্ছে।

বিশেষ এই হেলমেট তৈরির পেছনে রয়েছে পাউলোর নিজের গল্প। এক যুগ আগে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এই নারী। নিতে হয় কেমোথেরাপি। সে সময় চুল ঝরা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তিনি। সে সময় এ বিষয়টি নিয়ে পড়াশুনা করতে করতেই পেয়ে যান সমাধান।

কেমোথেরাপি হেলমেট আবিষ্কারক পাউলো এসত্রাদা বলেন, চিকিৎসক আমাকে যখন বলেছিলেন কেমোথেরাপি নেয়ার কথা, তখন চুল ঝরে যাওয়া নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি। চিকিৎসা শেষে আরও বেশি খুশি ছিলাম। আমি চেয়েছি ক্যান্সারে আক্রান্ত সবাই যেন এই হেলমেটটা ব্যবহারের সুযোগ পায়।

চিকিৎসকরা বলেন, থেরাপির আগে হেলমেটটি অতিমাত্রায় ঠান্ডা তাপমাত্রায় রাখতে হয়। ফলে এটি মাথায় পড়লে রক্তানালী সাময়িকভাবে সংকুচিত হয়ে আসে। এতে করে চুলের ফলিকলে ওষুধ প্রবেশের পরিমাণ কমে যায়। যা চুল ঝরা রুখে দেয়।

ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ গনজালো রেকন্ডো বলেন, ব্যবহারের দুইদিন আগে থেকে হেলমেটটি ফ্রিজে রেখে দিতে হয়। রোগীর যতগুলো কেমোথেরাপি চলবে প্রত্যেকটি গ্রহণের সময়ই পরতে হবে হেলমেটটি। ব্যবহারকালে এর তাপমাত্রা হতে হবে মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরিবর্তন করতে হবে ত্রিশ মিনিট পর পর।

আর্জেন্টিনা ছাড়াও চিলি, মেক্সিকো, স্পেন, যুক্তরাষ্ট্রেও ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে এই হেলমেটটি। গেল এক দশকে এই হেলমেট ব্যবহার করে উপকৃত হয়েছেন ৬০ হাজারের বেশি ক্যান্সার রোগী।

২০১৭ সালে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ক্যান্সার চিকিৎসায় এই কেমো হেলমেট ব্যবহারের অনুমোদন দেয় আর্জেন্টিনার ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ।

/এনএএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply