১৭২ দিন পর অনশন ভাঙলেন আলোচিত বন্দি ফিলিস্তিনি খলিল আওয়াদেহ। কোনো অভিযোগ বা বিচার ছাড়া আটকে রাখার প্রতিবাদে গত মার্চ থেকে অনশন কর্মসূচি পালন করছিলেন তিনি। মুক্তির খবর নিশ্চিতের পর বুধবার (৩১ আগস্ট) খাবার মুখে তোলেন তিনি। ২ অক্টোবর বন্দিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার কথা তার। খলিলের মুক্তিকে বিজয় হিসেবে দেখছেন ফিলিস্তিনিরা।
প্রায় ছয় মাসের অনশনে ৪০ বছর বয়সী খলিল আওয়াদেহর ওজন কমে দাঁড়িয়েছে ৩৭ কেজিতে। যেকোনো সময় মৃত্যু হতে পারে, এমন শঙ্কাও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এরপরও অবিচল ছিলেন নিজ সিদ্ধান্তে। ইসরায়েলের অন্যায়ের বিরুদ্ধে চালিয়ে গেছেন নীরব প্রতিবাদ।
গত ডিসেম্বরে আরও অনেক ফিলিস্তিনির মতোই বিনা অভিযোগে আটক করা হয় খলিল আওয়াদেহকে। ইসরায়েল এই বিচারবহির্ভুত ধরপাকড়ের নাম দিয়েছে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিটেনশন বা প্রশাসনিক আটকাদেশ। আদালতে না তুলে দিনের পর দিন কারাগারে আটকে রাখা হয় এমন বন্দিদের। বিভিন্ন কারাগারে এমন ফিলিস্তিনি বন্দির সংখ্যা প্রায় ৭শ। যার প্রতিবাদ জানাতেই গত মার্চে আরও কয়েকজন বন্দির সাথে অনশন শুরু করেন খলিল।
অনশন শেষে খলিল বলেন, শরীরের অবস্থা খুব খারাপ। ভেতরে মনে হয় শেষ হয়ে গেছি। তবে আল্লাহর ওপর ভরসা করে সাহস রেখেছি। যা আমাকে প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।
গত মাসেও এক দফা তার মুক্তির আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল ইসরায়েলি আদালত। এতে নিন্দা-সমালোচনার ঝড় উঠলে দফায় দফায় বিক্ষোভ করেন ফিলিস্তিনিরা, চাপ দেয় মধ্যস্থতাকারী মিসরও। অবশেষে আইনজীবীরা জানালেন তার মুক্তি নিশ্চিতের খবর। তবে ২ অক্টোবর মুক্তি পেলেও সুস্থ হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালেই থাকতে হবে তাকে।
শারীরিকভাবে চরম দুর্বল হলেও মনোবল চাঙ্গা খলিলের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া ভিডিওবার্তায় নিজের মুক্তির আনন্দকে ভাগ করে নেন ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে। সেখানে তিনি বলেন, আল্লাহর অশেষ দয়ায় মুক্তির খবর পেলাম। অক্টোবরের ২ তারিখ ছাড়া পাবো। উঠে দাঁড়ানোর শক্তি যতদিন না পাবো ততদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। আমার মুক্তির ঘোষণা আসলে ফিলিস্তিনি জনগণের অর্জন। যারা আমার পাশে ছিলেন, তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
খলিল আওয়াদের মুক্তির ঘোষণায় আনন্দিত ফিলিস্তিনিরা। একে বিজয় হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ফিলিস্তিনি সংগঠন ইসলামিক জিহাদ। তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেনি তেলআবিব।
/এডব্লিউ
Leave a reply