নানা কারণে ইন্টারনেটের গতি কমে যায়। ইন্টারনেট ডাউন বা স্লো হয়ে গেলে কী ধরনের সমস্যা বা বিরক্তি হয় তা আমরা সবাই জানি। ভার্চুয়াল দুনিয়ায় আমাদের নিত্যনৈমিত্তিক যত কাজ রয়েছে, তার সবই কোনো না কোনো সময় শ্লথগতির ইন্টারনেটের কবলে পড়েছে। হোক সেটি ইউটিউবের ছোট কোনো ভিডিও কিংবা স্কাইপে দেয়া গুরুত্বপূর্ণ কোনো সাক্ষাৎকার।
ইন্টারনেটের এ ধরনের আচরণের পেছনে বহুবিধ কারণ থাকতে পারে। তবে অনেক সময়ই দেখা যায়, মূলত রাউটারের কারণে ইন্টারনেটের গতি ধীর হয়ে যাচ্ছে। চলুন জেনে নেয়া যাক রাউটারের গতি বাড়ানোর ১০টি সহজ উপায়।
পরিষেবা নির্বাচন
কানেকশন নেয়ার আগে ইন্টারনেট পরিষেবা সরবরাহকারী এবং বিভিন্ন প্ল্যান সম্পর্কে খোঁজ খবর করুন, প্রতিবেশীদের থেকে জেনে নিন আপনি যে অঞ্চলে থাকেন, সেখানে কোন সংস্থা সবচেয়ে ভালো পরিষেবা। এমন একটি সংস্থা বেছে নিন, যা অন্তত ১০ এমবিপিএস পার সেকেন্ড গতির ওপরে স্পিড দেয়।
রিস্টার্ট এবং রিবুট
রাউটারের গতিবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে এটি অত্যন্ত প্রচলিত একটি পন্থা। টেক বিশেষজ্ঞরাও একদম প্রাথমিক ট্রাবলশুটিংয়ের ধাপ হিসেবে রাউটার রিস্টার্ট এবং রিবুটকে বিবেচনা করেন।
ডিভাইস কানেকশন
যদি আপনার অবস্থানের সীমার মধ্যে বেশ কয়েকটি নেটওয়ার্ক থাকে তবে সঠিক নেটওয়ার্কটি নিশ্চিত করে, ডিভাইসগুলো সংযুক্ত করুন। একটি সার্বজনীন ওয়াইফাই সাধারণত ধীর গতির হয়, যদি আপনার ডিভাইস এই ধরনের ওপেন নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত হয়ে যায় তবে কানেকশন স্বাভাবিকের চেয়ে ধীর গতির হবে।
রাউটারের অবস্থান
যদি আপনি কোনো ইলেকট্রনিক জিনিসের সামনাসামনি আপনার রাউটার রেখে দেন তাহলে ইন্টারনেটের স্পিড কম হতে পারে। কারণ ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গগুলো আপনার রাউটারের ইন্টারনেটের স্পিড কমিয়ে দেয়। যদি সে রকম থাকে তাহলে আপনি নিজের রাউটারের অবস্থান পরিবর্তন করুন।
অতিরিক্ত অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ করুন
নেটফ্লিক্স বা ইউটিউবের মতো স্ট্রিমিং অ্যাপগুলো প্রচুর পরিমাণে ব্যান্ডউইথ গ্রহণ করে। সুতরাং আপনি অন্য কোনো কাজ করলে, সেই কাজ শেষ না হওয়া অবধি অন্যান্য স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম বন্ধ রাখুন।
সিকিউরিটি ব্যবহার করুন
যদি আপনি স্লো ব্রডব্যান্ড স্পিড পেয়ে থাকেন তাহলে হয়তো আপনার রাউটারের সঙ্গে অন্য কোনো ব্যক্তি কানেক্টেড আছে। তাই আপনি নিজের রাউটারকে ভালো পাসওয়ার্ড এবং সিকিউরিটির মাধ্যমে সুরক্ষিত করুন। এর ফলে আপনার নেটওয়ার্কের স্পিড স্বাভাবিক থাকবে।
তার পরীক্ষা করুন
মডেম বা রাউটারে সংযোগকারী তারগুলো আলগা হয়ে গেলে বা পাঞ্চড হয়ে গেলে ইন্টারনেটের স্পিড স্লো হয়ে যেতে পারে। এছাড়া নিম্নমানের কোক্সিয়াল স্প্লিটার স্পিডের ওপর প্রভাব ফেলে। নিশ্চিত করুন সমস্ত তারগুলো ঠিকঠাক আছে এবং সঠিকভাবে সংযুক্ত রয়েছে।
ল্যান ক্যাবলের ব্যবহার
যদি আপনি আরও বেশি ইন্টারনেট স্পিড পেতে চান তাহলে ল্যান ক্যাবল ব্যবহার করুন। এই ক্যাবলের মধ্যেও যদি আপনি অত্যন্ত পুরনো ল্যান ক্যাবল ব্যবহার করেন তাহলে ইন্টারনেট স্পিড কম হতে পারে। ভালো হবে যদি আপনি ক্যাট-৬, ক্যাট-৬এ জাতীয় ক্যাবল ব্যবহার করেন। তাহলে আপনার ইন্টারনেটের স্পিড খুবই ভালো যাবে।
ওয়াইফাই রিপিটার যুক্ত করুন
আপনার ডিভাইস যদি রাউটার থেকে অনেকটা দূরে থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে একটি ওয়াইফাই এক্সটেন্ডার, বুস্টার বা রিপিটারের সাহায্যে আপনি বেশি স্পিড পেতে পারেন। বাড়িতে যদি বড় বড় ঘর থাকে তবে এটি একটি ভালো বিকল্প। এছাড়াও ল্যাপটপে একটি সফটওয়্যার ডাউনলোড করে ওয়াইফাই রিপিটার হিসাবে কাজ চালাতে পারেন।
গতি বাড়াতে কানেকশন একত্রিত করুন
আপনার ডিভাইসে হোম ইন্টারনেট, মোবাইল ডেটা বা একটি পাবলিক ওয়াইফাইয়ের মতো একাধিক কানেকশনের অ্যাক্সেস থাকতে পারে। হয়তো আপনি সেগুলো ব্যবহার করছেন না। সেক্ষেত্রে সেই কানেকশনগুলির স্পিড নষ্ট করার পরিবর্তে, স্পিডিফাইয়ের মতো একটি সরঞ্জাম ব্যবহার করুন যা সমস্ত কানেকশনকে একত্রিত করবে এবং আপনি হাই স্পিড কানেকশন উপভোগ করতে পারবেন।
ইউএইচ/
Leave a reply