থামছেই না জাপোরিঝিয়া পরমাণু কেন্দ্র ঘিরে হামলা-নাশকতা। অথচ, রাশিয়া-ইউক্রেন কোনোপক্ষই দায়ভার নিতে নারাজ। মস্কোর অভিযোগ, স্পর্শকাতর এলাকাটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় তিন দফা মিসাইল ছুড়েছে কিয়েভ। এ অবস্থায় জাপোরিঝিয়া পরমাণু কেন্দ্রের চারপাশে ‘সেফ জোন’ গঠনের তাগিদ দিয়েছে জাতিসংঘ। খবর আলজাজিরার।
মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস স্পর্শকাতর এলাকাটি থেকে সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি বিষয়টিকে স্বাগত জানালেও হামলা-নাশকতার জন্য একতরফাভাবে ইউক্রেনীয় বাহিনীকেই দায়ী করছে রাশিয়া।
জাপোরিঝিয়া নিয়ে ঘোলাটে পরিস্থিতির মধ্যেই এ ইস্যুতে জরুরি বৈঠক ডাকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। সেখানেই, মহাসচিব আহ্বান জানান পরমাণু কেন্দ্রটিকে ঘিরে ‘সেফ জোন’ গঠনের। সেই সাথে সেখানে কোনো রকম সেনা উপস্থিতির বিপক্ষে মত দেন তিনি।
বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, পরমাণু কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য প্রথমেই সেটির অভ্যন্তর বা আশেপাশে সামরিক অভিযান চালানো থেকে বিরত থাকতে হবে রাশিয়া-ইউক্রেন উভয়পক্ষকেই। কোনোভাবেই জাপোরিঝিয়াকে টার্গেট বানানো যাবে না। দ্বিতীয় পদক্ষেপ হিসেবে, অঞ্চলটি থেকে রাশিয়াকে সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি। একইসাথে ইউক্রেনকে বলবো- সেখানে বাহিনী মোতায়েন করবেন না।
ওই বৈঠকে রাশিয়া জানায়, কেন্দ্রের সুরক্ষায় তারা বরাবর তৎপর। কিন্তু, রণক্ষেত্রে জয় না পেয়ে চোরাগোপ্তা হামলার পথ বেছে নিয়েছে ইউক্রেন।
জাতিসংঘে রুশ প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেঞ্জিয়া বলেন, রাশিয়া কেন্দ্রটির সুরক্ষায় তৎপর। আমাদের নজরদারিতে জাপোরিঝিয়ায় স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে; নিরাপত্তা সংকটও নেই। কিন্তু, ইউক্রেনীয় বাহিনী ক্রমাগত হামলা-নাশকতা চালিয়েই যাচ্ছে। এতে তেজস্ক্রিয় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে।
এদিকে, জাতিসংঘের আহ্বানকে স্বাগত জানিয়েছে ইউক্রেন। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির দাবি, তেজস্ক্রিয় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে অবিলম্বে রুশ সেনা প্রত্যাহার করা প্রয়োজন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদেমির জেলেনস্কি বলেন, আইএইএ যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে হামলা-নাশকতায় রাশিয়ার সম্পৃক্ততা স্পষ্ট। সামরিক সরঞ্জাম এবং সেনা উপস্থিতির মাধ্যমে তারা কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের ওপর সৃষ্টি করছে মানসিক চাপ। জাতিসংঘ কেন্দ্রটি ঘিরে যে ‘সুরক্ষা বলয়’ তৈরীর আহ্বান জানিয়েছে, সেটিকে স্বাগত জানাই।
গৎ সপ্তাহে, আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা- আইএইএ এর ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল যখন কেন্দ্রটি পরিদর্শনে যান; তখনও সেখানে হামলা চলছিলো। সে সময়ই সিদ্ধান্ত আসে, কেন্দ্রের নিরাপত্তার স্বার্থে স্থায়ীভাবে সেখানে থাকবেন জাতিসংঘের দুই কর্মকর্তা। কারণ, রিঅ্যাক্টরগুলোয় মিসাইল আঘাত করলে; ঘটবে চেরনোবিলের মতোই ভয়াবহ আরেকটি দুর্ঘটনা।
/এসএইচ
Leave a reply