নানামুখী উদ্যোগ আছে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কমানো যাচ্ছে না বাণিজ্য ঘাটতি। বাংলাদেশের তিন দিক দিয়ে লাগোয়া দেশ হলেও বরাবরই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে এগিয়ে ভারত। এমন অবস্থায়, সমন্বিত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তির দিকে এগুচ্ছে দুই দেশ। যার নাম কমপ্রিহেনসিভ ইকনোমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট বা সেপা। ভারতীয় ব্যবসায়ীদেরও এই বার্তা দিয়েছেন, দিল্লি সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিশ্লেষকদের ধারণা, এই চুক্তির ফলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সুবিধায় মিলবে সমতা।
প্রায় শতভাগ পণ্যে শুল্ক সুবিধা দিলেও এর ব্যবহার করতে পারছে না বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে বাধা হয়েছে সামনে এসেছে চারটি বড় দাগের কারণ। এমন অবস্থায়, ভবিষ্যৎ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সুসংহত করতে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি বা সেপায় সম্মত হয়েছে দুই দেশ।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বললেন, সেপা চুক্তি হবে এটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটা কীভাবে হবে তা আলোচনার বিষয়। দু-চারদিনের মধ্যে হয়ে যাবে, বিষয়টা তা নয়। তবে. এটা করার ক্ষেত্রে আমরা ইতিবাচক।
এ সংক্রান্ত পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছালে বাণিজ্য হিস্যায় ভূমিকা রাখবে এই চুক্তি। এতে ভারতে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি বাড়বে ১৯০ ভাগ। আর বাংলাদেশে ভারতের রফতানি বৃদ্ধি পাবে ১৮৮ ভাগ। বাড়বে প্রবৃদ্ধিও।
বাংলাদেশ-ভারত চেম্বারের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, সেপা চুক্তি হচ্ছে উইন-উইন সিচ্যুয়েশন। মনে রাখতে হবে, আজকে আমরা এলডিসি কান্ট্রি। আমাদের পণ্য ভারতে ডিউটি ফ্রি যাচ্ছে। আমাদের এখানে ভারতের পণ্য ফুল ডিউটিতে আসছে। কিন্তু এটা তো আজীবন চলবে না। ২০২৬-এ এটা শেষ হয়ে যাবে। আমরা নতুন চুক্তিতে না গেলে তখন আমাদের সব পণ্যে ফুল ডিউটি লাগবে। তাতে রফতানি যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা থেমে যাবে। সেপা চুক্তির মজাটা হচ্ছে, উভয় দেশ রফতানিকে প্রধান্য দেবে। আর রফতানিতে ডিউটি ফ্রি করে দেবে।
গেল অর্থবছরে ভারত থেকে আমদানি হয় এক লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকার পণ্য। এতে রাজস্ব পাওয়া যায়, ১৭ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। সেপা স্বাক্ষর হলে কমে যাবে রাজস্ব আয়। তবে, সেবা ও বিনিয়োগ বাড়ায় চাঙ্গা হবে সামগ্রিক অর্থনীতি।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বানিজ্য, বিনিয়োগ ও যোগাযোগের মাধ্যমে আমরা যখন দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাটা করবো, তখন আমাদের সরবরাহ সক্ষমতাও বাড়বে। আমাদের বন্দরগুলো যদি ভারতকে ব্যবহার করতে দিই, সেক্ষেত্রেও বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, পর্যালোচনার পর সুবিধাজনক সময়ে স্বাক্ষর হবে এই চুক্তি।
/এমএন
Leave a reply