কিং চার্লসের বৈচিত্র্যময় জীবন

|

কিং চার্লস দ্য থার্ড।

রূপকথার গল্পের রাজপুরুষের মতোই যেনো বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবন ব্রিটেনের নতুন রাজা তৃতীয় চার্লসের। ৭৩ বছরের যুবরাজ জীবনে কখনও তাকে দেখা গেছে লেখক হিসেবে আবার কখনো প্রেমিকরূপে। মদ খেয়ে গাড়ি চালানো কিংবা ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রথম গ্র্যাজুয়েট হওয়ার মতো অনেক কিছুরই শুরু হয়েছে তার হাত দিয়েই। জলবায়ু নিয়ে তার কাজ এবং উদ্যোগের কারণে পরিণত হয়েছেন পরিবেশ বিষয়ক আইকনে। তবে প্রিন্সেস ডায়ানার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ আর তার মৃত্যু, অনেকের কাছে ভিলেন বানিয়েছে চার্লসকে।

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ যখন সিংহাসনে বসেন তখন চার্লসের বয়স মাত্র ৩ বছর। রানির অভিষেকের পরই রাজমুকুট নির্ধারিত হয়ে যায় প্রিন্স চার্লসের জন্য। রাজ অভিষেকের জন্য সবচেয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করা সদস্যও তিনি।

ব্রিটিশ রাজপরিবারের ঐতিহ্যের সাথে আধুনিকতার যে সমন্বয় তার শুরুটা হয় চার্লসের হাত ধরেই। প্রিন্স অব ওয়েলস হিসেবে একদিকে রাজকীয় দায়িত্ব পালন, অন্যদিকে ব্যক্তিগত খামখেয়ালি, দুটোই স্পষ্ট চার্লসের চরিত্রে। ব্যক্তিগত শিক্ষকের কাছে শিক্ষা গ্রহণের বদলে পড়েছেন স্কুলে। তিনিই প্রথম রাজসদস্য যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট। ১৯৭১ সালে ক্যামব্রিজ থেকে নেন ব্যাচেলর ডিগ্রি।

রাজা চার্লস, আলোচিত তার সমাজ ও পরিবেশ উন্নয়নমূলক কাজের জন্য। চারশোর বেশি দাতব্য সংস্থায় জড়িত চার্লস সবচেয়ে বেশি প্রশংসা কুড়িয়েছেন স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে কাজ করার কারণে। এছাড়াও দরিদ্র দেশগুলোর নারী এবং শিশুদের সহায়তাতেও অবদান রয়েছে চার্লসের। সুনাম কুড়িয়েছিলেন লেখক হিসেবেও। ১৯৮০ সালে তার লেখা ‘ওল্ড ম্যান অব লকনেইগার’ নামে শিশুতোষ বই বেশ আলোচনার জন্ম দেয়।

অবশ্য, গত কয়েক দশকে, ব্রিটিশ রাজপরিবারের যত কেলেঙ্কারি তার বড় অংশ জুড়েই ছিলেন চার্লস। মাত্র ১৪ বছর বয়সে স্কুলের একটি অনুষ্ঠানে মদ অর্ডার করে বিতর্কের মুখে পড়েন। এমনকি তার একাধিক গাড়ি রয়েছে যেগুলোতে জ্বালানী হিসেবেও ব্যবহৃত হয় মদ। বিস্কুট কোম্পানি খুলে রাজপরিবারেই বিতর্কের জন্ম দেন।

তবে এক ডায়ানা ইস্যুই অনেকের সামনে ভিলেনে পরিণত করে রাজা চার্লসকে। যুবরাজ চার্লস ১৯৮১ সালে বিয়ে করেন ডায়ানা স্পেনসারকে। সারা বিশ্বে আলোড়ন তোলে ওই রাজকীয় বিয়ে। মানব কল্যাণ আর সমাজ সেবার জন্য দ্রুতই গ্লোবাল আইকনে পরিণত হন প্রিন্সেস ডায়ানা। তবে বিয়ের ১১ বছরের মাথায় ডায়ানার সাথে বিচ্ছেদ হয় চার্লসের। বলা হয়, ক্যামিলা পার্কারের সাথে সম্পর্ক আর শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের কারণেই ঘটে তাদের বিচ্ছেদ। এমনকি প্যারিসে সড়ক দুর্ঘটনায় ডায়ানার মৃত্যুর পেছনেও অনেকে আঙুল তোলেন চার্লসের দিকে। ২০০৫ সালে ক্যামিলা পার্কারকেই বিয়ে করেন চার্লস।

মায়ের মৃত্যুর পরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবেই রাজার দায়িত্ব পেয়েছেন চার্লস। তার উপাধি হয়েছে রাজা তৃতীয় চার্লস। এর আগে ১৬২৫ সালে রাজা প্রথম চার্লস এবং ১৬৬০ সালে রাজা দ্বিতীয় চার্লস ব্রিটেন শাসন করেন।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply