সব সমীকরণকে ভুল প্রমাণ করে এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা

|

ছবি: সংগৃহীত

টসে জিতেই যদি ম্যাচ জেতা হয়ে যেত তবে এশিয়া কাপে তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হতো পাকিস্তান। টস জয়ের ফলে ফেভারিট তকমা, পেসারদের এনে দেয়া আগুনে সূচনা ও স্পিনারদের সেই ব্যাটন হাতে সাফল্যের ধারা- কোনোকিছুই যথেষ্ট হয়নি পাকিস্তানের জন্য। উল্টো, ধ্বংসাবশেষ থেকে উঠে এসে পাল্টা আক্রমণে নিজেদের হার না মানা মানসিকতার পরিচয় ক্ষণে ক্ষণে জানান দেয়া শ্রীলঙ্কাই জয় করলো দুবাইয়ের এশিয়া কাপ। বাবর আজমের দলকে ২৩ রানে পরাজিত করে ৬ষ্ঠবারের মতো এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন হলো দাসুন শানাকার দল।

পরে ব্যাট করলেই যে আসরে জয় মেলে, সেখানে ১৭১ রানের লক্ষ্য খুব বেশি হওয়ার কথা নয়। তবে শুরুটাও ভালো হয়নি পাকিস্তানের। প্রমোদ মাদুশানের পরপর ২ বলে ভবিদায় হন বাবর আজম ও ফখর জামান। যে টপ অর্ডারের উপর নির্ভর করে পাকিস্তানে ব্যাটিং লাইনআপের পরের নামগুলো কেবল পিঞ্চ হিটিংয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত, সেখানেই পুরো আসরজুড়ে ব্যর্থ হয়ে তা ফাইনালেও আরেকবার অনূদিত করলেন বাবর।

ছবি: সংগৃহীত

এই দুজনের বিদায়ের পর মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইফতিখার আহমেদের ব্যাটে লড়াই করেছে পাকিস্তান। কিন্তু রানের গতি বাড়ানোর চেয়ে উইকেটে সময় কাটিয়ে বলপ্রতি রান করে পরের হার্ড হিটারদের জন্য মঞ্চ বানাতেই যেন ব্যস্ত ছিলেন এই দুই ব্যাটার। ৫৯ বলে ৭১ রানের এই জুটির সময় আস্কিং রান রেট কেবল বেড়েই গেছে। আর ৩১ বলে ৩২ রান করে ইফতিখার আউট হওয়ার পর বাকিরা চাপা পড়েছে পাহাড়সম সেই রান রেটের নিচে। পরোক্ষভাবে চাপ বাড়িয়েছেন রিজওয়ানের ইনিংসও। হাত খুলে রান করতে না পেরে ৪৯ বলে তার ৫৫ রানের ইনিংস খুশদিল আসিফ আলিদের ওপর চাপ কমায়নি, কেবলই বাড়িয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত

এরপর দারুণ বোলিংয়ে পাকিস্তানের একের পর এক উইকেট তুলে নিয়ে শেষ ৩-৪ ওভারকে কেবল আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত করেন লঙ্কান বোলাররা। খুশদিল শাহ ও আসিফ আলিকে পরপর দুই বলে তুলে নিয়ে পাকিস্তানকে আরও একবার প্রিয় প্রতিপক্ষই বানালেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ব্যাট যেমন, বল হাতেও তেমনি পার্শ্বনায়কের জায়গায় এই অলরাউন্ডার। ব্যাট হাতে ২১ বলে ৩৬ রানের ইনিংসের পর বল হাতে ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে তিনি তুলে নিয়েছেন ৩টি উইকেট। ৩৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে প্রমোদ মাদুশান বল হাতে লঙ্কানদের জয়ের নায়ক। শুরুর দারুণ বোলিংয়ের পরের স্পেলে আরও দুটি উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি।

ছবি: সংগৃহীত

এর আগে, পাকিস্তানের পেস ও স্পিনের তোপে ৫৮ রানেই ৫ উইকেট হারানোর পরও পাল্টা আক্রমণের দুর্দান্ত উপাখ্যান রচনা করে ভানুকা রাজাপাকসের ৪৫ বলে ৭১ এবং হাসারাঙ্গার ২১ বলে ৩৬ রানের উপর ভর করে ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। উজ্জীবিত শরীরী ভাষা ও হার না মানা মানসিকতায় পাকিস্তানকে আরও একবার দর্শক বানিয়ে উৎসব করার জন্য এই রানই শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট বলে প্রতীয়মান হয়।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply