মাঝরাতে সিপাকে খুন করে পুকুরে ফেলে দেন গৃহশিক্ষক ও প্রেমিক বাইজিদ

|

নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:

পুকুরে ভাসমান স্কুলছাত্রী আশিকা জাহান সিপার (১৬) লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পুলিশ জানতে পেরেছে, সিপার গৃহশিক্ষক ও প্রেমিক বাইজিদ সরকারই (২৬) তাকে হত্যা করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, এরই মধ্যে আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বাইজিদ।

গত ২৮ আগস্ট পৌর এলাকার মুন্সেফপাড়া বোডিং মাঠের পুকুর থেকে আশিকা জাহান সিপার ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়। জেলা শহরের গভর্নমেন্ট মডেল গার্লস হাই স্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল তার। পরিবারসহ জেলা শহরের মুন্সেফপাড়ায় বাসা ভাড়া করে থাকতো তারা।

সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক হুমায়ুন কবির জানান, বাইজিদ সরকার আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। শনিবার বিকেলে আদালতের কাছে তিনি বলেছেন, গত তিন বছর ধরে সিপাকে তার বাসায় গিয়ে পড়ান তিনি। এর মধ্যে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে বাইজিদ একটি খালি বাসায় দেখা করতে বলেন সিপাকে। বাসাটি তারই আরেক শিক্ষার্থীর। সিপা সেখানে যাওয়ার পর প্রতিবেশী একজন দেখে ফেলেন। তার মাধ্যমে বিষয়টি লোক-জানাজানি হলে সিপা বাইজিদকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়।

পরে ২৭ আগস্ট রাত দুইটার দিকে ফোনে কথা বলার একপর্যায়ে তাদের দুজনের আবার ওই একই বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। মাঝরাতেই সিপা কাউকে কিছু না বলে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। রাতেই সে বোডিং মাঠের পুকুরপাড়ে বাইজিদের সাথে দেখা করে। সেখানে তাদের আরেক দফা ঝগড়া হয়।

এসময় বাইজদ তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। এত সিপা রেগে গেলে বাইজিদ তার চুলের মুঠি ধরে পাশের গাছে মাথা আঘাত করে। সিপা অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় বাইজিদ। পরদিন দুপুরে ওই পুকুর থেকে সিপার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

উপপরিদর্শক হুমায়ুন কবির আরও জানান, ঘটনার পর সিপার পরিবারের সাথে বাইজিদও তাকে খোঁজার অভিনয় করে৷ তবে শুরু থেকেই পরিবারের সন্দেহ ছিল বাইজিদের ওপর। পরে সিপার লাশ উদ্ধার করা হলে বাইজিদকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়।

এই ঘটনায় সিপার বাবা বাইজিদকে আসামি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় একটি আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলা করেছিলেন। সেই মামলার তদন্তেই বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর এই কাহিনি।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply