নারী ফুটবল দলের সাফ জয়ে বাধভাঙা উচ্ছ্বাস এখন ময়মনসিংহের কলসিন্দুর গ্রামে। সানজিদা-তহুরাদের কৃতিত্বে গর্বিত পরিবার আর স্বজনরা। এবার সাফ চ্যাম্পিয়ন নারী দলে আছে গ্রামটির আট ফুটবলার।
‘…নিরঙ্কুশ সমর্থনের প্রতিদান আমরা দিতে চাই। ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে ট্রফি নিয়ে না দাঁড়ালেও চলবে। আমরা জীবনযুদ্ধেই লড়ে অভ্যস্ত। গ্রামবাংলার দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষদের হার না মানা জীবনের প্রতিটি পর্ব খুব কাছাকাছি থেকে দেখা আমার।…’- ফেসবুকে লেখা সানজিদার এসব বাক্য তার বাস্তব জীবন থেকেই নেয়া।
ফুটপাথ থেকে কাপড় কেনা বা, বিদেশ সফর থেকে দেশে ফিরে সিএনজি-অটোরিক্সায় করে ঘরে ফেরার সাথে পরিচিত এই ফুটবলাররা। ফেডারেশনের সেই অবহেলার অভিমান থেকেই হয়তো অনুজদের বন্ধুর রাস্তা কিছুটা হলেও সহজ করে, দিয়ে যেতে চাওয়ার ইচ্ছা তার। সহযোদ্ধা ফুটবলার সাবিনা আক্তারের মৃত্যু শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে এগিয়ে যাওয়া কলসিন্দুরের নারী ফুটবলারদের জয়ের লক্ষ্যেই এই মাঠে নামা।
কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে যখন মাঠ কাঁপাচ্ছিল সানজিদা, মারিয়া, মারজিয়াসহ কলসিন্দুরের সাত ফুটবলার, তখন একসময়ের টিটকারি টিপ্পনি কাটা ব্যক্তিটিও ময়মনসিংহের কলসিন্দুর বাজারের চায়ের দোকানে অন্যদের সাথে উল্লাস করছে গোল দেয়ার আনন্দে। এলাকাবাসী জানালেন, মেয়েদের এই জয়ে তারা আনন্দিত ও গর্বিত। চায়ের দোকানে খেলা দেখা কলসিন্দুরের এক বাসিন্দা বলেন, টিভি দেখলাম প্রায় দশ হাজার মানুষ খেলা দেখছে। আমরাও দেখলাম। খুব আনন্দ হয়েছে। গর্বে বুকটা ফুলে গেছে।
যে জনপদে ছিল ধর্মীয় গোঁড়ামি ও বাল্য বিয়ের প্রচলন, সেখানে নিজেদের মেয়েরাই এনে দিলো ফুটবলে শিরোপা। তাই এই জয়ে উচ্ছ্বসিত নারী ফুটবলারদের অভিভাবক ও স্বজনরা। সানজিদা-মার্জিয়াদের আত্মীয়স্বজনরা জানালেন, দেশের জন্য এই মেয়েদের কঠোর পরিশ্রমের ফলাফল পাচ্ছে এখন বাংলাদেশ। এমন মেয়েদের নিয়ে তাই গর্বের সীমা নেই কলসিন্দুরের গ্রামবাসী।
আরও পড়ুন: নারী ফুটবলের বিরোধিতা করা এলাকাবাসীই এখন স্বপ্নার জন্য গর্বিত
/এম ই
Leave a reply