ইউক্রেনে নতুন করে শক্তি প্রয়োগের ঘোষণা রাশিয়ার

|

ইউক্রেনে নতুন করে শক্তি প্রয়োগের ঘোষণা দিল রাশিয়া। গতকাল মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) ৩ লাখ রিজার্ভ ফোর্স রণক্ষেত্রে মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একইসঙ্গে জানান, ফ্রন্টলাইনে থাকা সেনাদের পাল্টে নতুন ব্যাটালিয়ান পাঠানো হবে। পশ্চিমারা পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করছে বলেও অভিযোগ করেন পুতিল। খবর রয়টার্স ও এপির।

ভীতি প্রদর্শনে রাশিয়া বিশ্বাসী নয় বলে হুমকি দেন পুতিন। বলেন, মোক্ষম জবাব দেয়ার জন্য মস্কোর হাতেও রয়েছে শক্তিশালী সব যুদ্ধ সরঞ্জাম। অস্ত্রের উৎপাদন বৃদ্ধির নির্দেশও দেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

জোরালো সামরিক অভিযানের মধ্যেই গেলো সপ্তাহে গুঞ্জন ওঠে ইউক্রেন অভিযান থেকে পিছু হটছে রুশ সেনাবহর। পশ্চিমাদের সব আলোচনায় পানি ঢেলে নতুন করে সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিলেন পুতিন। বললেন, শিগগিরই রণক্ষেত্রে মোতায়েন করা হবে রিজার্ভ ফোর্সের ৩ লাখ সেনা।

ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবকে সমর্থন জানাতেই নতুনভাবে সেনা মোতায়েনের ডিক্রি জারি হলো। সংরক্ষিত বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান, ফ্রন্টলাইনে যোগ দিন। যারা সেনাবাহিনীকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন, বিশেষ দক্ষতা রয়েছে এবং যুদ্ধের অভিজ্ঞতা রয়েছে; তারা অগ্রাধিকার পাবেন। তবে, ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানে যাওয়ার আগে অবশ্যই তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। আবারও বলছি, ফ্রন্টলাইন থেকে কিছু সংখ্যক সেনা পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার দেয়া সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট আরও জানান, পরমাণু অস্ত্রের মাধ্যমে ব্ল্যাকমেইল করছে পশ্চিমা বিশ্ব। কিন্তু ফাঁকা হুমকি না দিয়ে গণবিধ্বংসী হামলা চালানোর সক্ষমতা রয়েছে রাশিয়ার।

ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব সব সীমা লঙ্ঘন করেছে। ন্যাটো শুধু প্রোপাগাণ্ডাই ছড়ায়নি, বরং রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালাতে কিয়েভকে উসকানি দিয়েছে। সরবরাহ করছে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম। পরমাণু কেন্দ্র এবং পারমাণবিক অস্ত্রের মাধ্যমেও করছে ব্ল্যাকমেইল। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, রাশিয়ারও রয়েছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র। যা ন্যাটোর ভাণ্ডার থেকেও শক্তিশালী। পশ্চিমাদের মতো ফাঁকা বুলিতে আমরা বিশ্বাসী নই। রুশ জনগণকে রক্ষায় যেকোনো মুহূর্তে এসব সমরাস্ত্র ব্যবহারে প্রস্তুত আমরা।

এ সময় দখলকৃত ৪টি অঞ্চলে আয়োজিত গণভোট নিয়েও মন্তব্য করেন ভ্লাদিমির পুতিন। জানান, দোনবাসের মানুষের ইচ্ছাকেই সম্মান জানাতে চায় রাশিয়া।

ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ২০১৪ সালের লড়াইর পর রুশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোয় দমন-পীড়ন বাড়িয়েছে ইউক্রেন। বর্বর পর্যায়ে বৃদ্ধি পায় হুমকি-সন্ত্রাসবাদ-সহিংসতা। সেখানকার বাসিন্দারা নব্য-নাৎসীবাদের এ অত্যাচার থেকে মুক্তি চান। সে কারণেই রাশিয়ার সাথে সংযুক্ত হতে গণভোটের আয়োজন করছেন। খেরসন-দোনবাস ও জাপোরিঝিয়ার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছি আমরা। কারণ প্রিয়জনদের কখনোই জল্লাদের হাতে তুলে দিতে পারি না।

উল্লেখ্য, রাশিয়ার সাথে সংযুক্ত হতে খেরসন, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে আগামী ২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গণভোট হওয়ার কথা রয়েছে। এই সিদ্ধান্তে কঠোর নিন্দা-সমালোচনায় মুখর পশ্চিমা বিশ্ব। জানিয়েছে ‘ভুয়া গণভোটে’র ফলাফল কোনোভাবেই তারা মানবে না।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply