ইউক্রেনের দখলকৃত চারটি অঞ্চলে আজ শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) শুরু হচ্ছে গণভোট। রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার প্রশ্নে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে এ আয়োজন। রুশপন্থি এবং রুশ ভাষাভাষীরা চান উন্নত ভবিষ্যৎ, সুরক্ষিত জীবন; সে কারণেই তাদের এ উদ্যোগ। খবর রয়টার্সের।
বিপরীতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কির অভিযোগ, গণভোট আর সেনা বৃদ্ধির ঘোষণার মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখাতে চাইছে রাশিয়া।
ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। শুধু হ্যা অথবা না ভোট প্রদানের সুযোগ থাকছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার দখলকৃত ৪টি অঞ্চল খেরসন-দোনেৎস্ক-লুহানস্ক-জাপোরিঝিয়ায় ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে এ গণভোট।
আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনের উপ-প্রধান মেরিনা ফোমিশেভা বলেন, সুষ্ঠু গণভোটের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বাসিন্দারা যেনো মৃত্যু ঝুঁকিতে না পরেন, সেজন্য তাদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ভোটগ্রহণ করা হবে। আমরা নীতিমালা মেনেই কাজ করছি।
আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন প্রধান ভ্লাদিমির ভিসোৎস্কি বলেন, দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের সব বাসিন্দারা যেনো ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সেটি নিশ্চিতে গুরুত্ব দিচ্ছি। এমনকি যারা হামলা আতঙ্কে অঞ্চলটির বাইরে আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের কাছেও পৌঁছানো হবে ব্যালট।
অঞ্চলগুলোর বাসিন্দারা বলছেন, হামলা-আতঙ্ক ছাড়া নিশ্চিত ভবিষ্যৎ চান তারা। সে কারণেই গণভোটে অংশ নিচ্ছেন।
কেউ কেউ বলেন, দিনশেষে রাশিয়াই গোটা বিশ্বে প্রভাবশালী রাষ্ট্র। শক্তিমত্তার পাশাপাশি সেখানে ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত। সুতরাং রাশিয়ার অংশে পরিণত হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। দীর্ঘদিন থেকে এটাই চাচ্ছি আমরা।
এ পরিস্থিতির জন্য ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের উদাসীনতা এবং রুশবিদ্বেষকে দায়ী করছে পুতিন প্রশাসন। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, গেলো বছরের ৫ আগস্ট প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট উঠে এসেছিল রুশবিদ্বেষ। তিনি বলেছিলেন, কেউ যদি রাশিয়ার প্রতি ভালোবাসা অনুভব করেন, তাহলে পরিবার-সন্তান নিয়ে ত্যাগ করতে পারেন ইউক্রেন। তার সেই বক্তব্যের প্রভাবেই ৪টি অঞ্চলে হচ্ছে গণভোট। তাহলে আজ কেনো পূর্বাঞ্চলকে নিজের দাবি করছেন?
রাশিয়ার চাপে পরেই এ গণভোট, এমন দাবি ইউক্রেনের। জেলেনস্কির অভিযোগ, রণক্ষেত্রে বেকায়দায় ফেলতেই ব্যবহার করছে তার দেশবাসীকে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, গণভোট আর সেনা বৃদ্ধির ঘোষণার মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে রাশিয়া। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান অনঢ়। অঞ্চলগুলো দখলমুক্ত করার অগ্রযাত্রায় বিন্দুমাত্র প্রভাব ফেলতে পারবে না রাশিয়া। তারা তথ্য বিকৃতির মাধ্যমে স্থানীয়দের মগজ ধোলাই করেছে। কিন্তু আখেরে বিজয় পাবে ইউক্রেন।
ইউক্রেনের কাছ থেকে ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ ক্রাইমিয়া দখল করে রাশিয়া। এক গণভোটের পর অঞ্চলটি নিজেদের অংশ হিসেবে ঘোষণা দেয় ভ্লাদিমির পুতিন প্রশাসন।
/এমএন
Leave a reply