রংপুরে ইয়াবাসহ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও চাঁদা দাবির অভিযোগে ২ যুবলীগকর্মী গ্রেফতার

|

চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতারকৃত রাজু ও জেলা যুব মহিলালীগের আহবায়ক সুরাইয়া আক্তারের স্বামী তপু।

স্টাফ করেসপনডেন্ট, রংপুর:

রংপুরে স্বেচ্ছাসেবকলীগের একটি ওয়ার্ড কমিটির সহ-সভাপতিকে দেড় হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করেছে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। এছাড়াও, যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে জেলা যুব মহিলালীগের আহবায়কের স্বামীসহ ২ যুবলীগ কর্মীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দুটি ঘটনাতেই নগরীর হাজিরহাট থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হলেও যুবলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থার বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের রংপুর কার্যালয়ের কর্মকর্তা মোজাফফর হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রংপুর মহানগরীর সিও বাজারে অভিযান চালিয়ে রাজু আহম্মেদকে মোটর সাইকেল আটক করা হয়। পরে তার শরীরে তল্লাশী চালিয়ে ১ হাজার ৫০০ পিচ ইয়াবা পাওয়া গেলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। রাজু আহমেদ হাজিরহাট মন্থনা মুনয়াপাড়ার বাসিন্দা। তার নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এসআই আলমগীর হোসেন বাদি হয়ে হাজিরহাট থানায় মাদক আইনে মামলা দায়ের করেন। পরে মোটরসাইকেলসহ তাকে পুুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, দলীয় পরিচয়ের আড়ালে রাজু আহমেদ দীর্ঘদিন থেকে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসা এবং সেবনের সাথে জড়িত।

আরপিএমপি’র হাজিরহাট থানার ওসি রাজিব বসুনিয়া জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর একজন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে আমাদের থানায় মামলার মাধ্যমে হস্তান্তর করেছে।

এদিকে দলীয় সূত্র জানিয়েছে, রাজু মিয়া রংপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের হাজিরহাট থানার ১নং ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি। ঘটনার পরপরই তাকে দলীয় পদ-পদবী থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

রংপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি আতাউর জামান বাবু জানান, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স। রাজু মিয়া হাজিরহাট থানা ১নং ওয়ার্ডে আমাদের সহ-সভাপতি ছিলেন। ঘটনার পরপরই তাকে পদ পদবী থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। স্থায়ীভাবে বহিস্কারের জন্য থানা কমিটি আমাদের জানিয়েছে। আমরা দলীয় ফোরামে বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো।

অন্যদিকে, হাজিরহাটের একটি পেট্রোল পাম্পে যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে রংপুর জেলা যুব মহিলা লীগের আহবায়ক সুরাইয়া আক্তারের স্বামীসহ ২ যুবলীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হাজিরহাট থানার ওসি রাজিব বসুনিয়া জানান, বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ৩টার দিকে রংপুর জেলা যুবলীগের উদ্যোগে এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হোপ ফর লাইফের সহযোগিতায় ফ্রি হেলপ ক্যাম্প করার নামে একটি চিঠি নিয়ে হাজিরহাটের এলপিইজি পাম্পের ম্যানেজারের কাছে গিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে কোতয়ালী থানার ধাপ পাশারীপাড়ার বাসিন্দা ও রংপুর জেলা যুব মহিলা লীগের আহবায়ক সুরাইয়া আক্তারের স্বামী ইমরান হোসেন তপু (৩৫) এবং ধাপ শ্যামলী লেনের বাসিন্দা শামীম রহমান আজাদ (৫২)।

তিনি বলেন, চিঠি দেখে সন্দেহ হলে সংগঠনটি যুবলীগ এবং পুলিশকে বিষয়টি জানায়। পরে আমরা গিয়ে দেখতে পাই, চিঠিতে জেলা যুবলীগের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু তাতে যুবলীগের কোনো মনোগ্রাম নেই। যুবলীগের কোনো নেতার নাম উল্লেখ না করেই শুভেচ্ছান্তে রংপুর জেলা যুবলীগের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় রংপুর সরকারি কলেজে ফ্রি হেল্প ক্যাম্পের কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে।

পরে বিষয়টি যাচাইবাছাই শেষে ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় এ ঘটনায় পাম্পের ম্যানেজারের করা দ্রুত বিচার আইনের মামলায় তপু ও আজাদকে গ্রেফতার করা হয়।

দলীয় সূত্র জানিয়েছে, তপু জেলা যুব মহিলালীগের আহবায়ক সুরাইয়ার স্বামী ও যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এবং আজাদও যুবলীগ নেতা। তাদের বিরুদ্ধে দলীয় কোনো ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি জানা যায় নি। তবে এ ঘটনাটি জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন জেলা যুবলীগের বেশ কয়েকজন নেতা।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply