ইরানের নৈতিক পুলিশের হেফাজতে ২২ বছরের তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর হিজাব বিরোধী আন্দোলন ফুঁসে উঠেছে দেশজুড়ে। হিজাববিরোধীদের প্রতিও সরকার কঠোর ও আক্রমণাত্মক অবস্থানে আছে। এখন পর্যন্ত এই বিক্ষোভে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে বলেও জানিয়েছে আইএইচআর। খবর আল আরাবিয়ার।
এ নিয়ে ইরান হিউম্যান রাইটসের পরিচালক মোহাম্মদ আমিরি–মোগাদ্দাম এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা এই ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সিদ্ধান্তমূলক এবং ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদকারীদের হত্যা ও নির্যাতন বন্ধের লক্ষ্যে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, ভিডিও ফুটেজ এবং আমাদের কাছে আসা মৃত্যু সনদগুলো থেকে দেখা গেছে, মিছিলে সরাসরি বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালের ৭ মার্চ নারীদের জন্য হিজাব বাধ্যতামূলক করে ইরান। দেশটির ধর্মীয় শাসকদের কাছে নারীদের জন্য এটি ‘অতিক্রম-অযোগ্য সীমারেখা’। বাধ্যতামূলক এই পোশাকবিধি মুসলিম নারীসহ ইরানের সব জাতিগোষ্ঠী ও ধর্মের নারীদের জন্য প্রযোজ্য।
তবে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সী মাহশা আমিনিকে হিজাব আইনে আটক এবং হত্যার পর থেকেই রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন শহরে রাজপথে নামে হাজারও মানুষ। প্রকাশ্যে চুল কেটে এবং হিজাব ও অন্যান্য পোশাক পুড়িয়ে ফেলে সরকারের বাধ্যতামূলক হিজাব আইনের প্রতিবাদ জানাচ্ছে ইরানিরা। নৈতিকতা পুলিশের হয়রানি বন্ধেরও দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।
সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, মাহশাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার পরই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে যান তিনি। এরপর তিনদিন কোমায় থাকার পর মৃত্যু হয় তার। পুলিশ স্বাভাবিক মৃত্যু বলে দাবি করলেও, পরিবার বলছে অসুস্থতার কোনো লক্ষণই ছিল না মাহশার। থানায় নেয়ার পথে তার মাথায় আঘাত করা হয় বলে দাবি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর।
এসজেড/
Leave a reply