ছাত্রদলের ফোবিয়া হয়েছে। তারা যেখানে মার খায়, ধরপাকড়ের শিকার হয়, মনে করে ছাত্রলীগ তাদের মেরেছে; এমন মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল-ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পরে ব্রিফিংকালে এ মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, আমরা শুনেছি, তারা (ছাত্রদল) নীলক্ষেত মোড়ে রাস্তাঘাট আটকিয়েছে। সাধারণ জনতা ও ছাত্ররা মিলে তাদের গণধোলাই দিয়েছে। এখানে ছাত্রলীগ দায়ী হবে কেন? আপনারা দেখেছেন ছাত্রলীগের সবাই উপাচার্য কার্যালয়ের আশপাশে ছিলেন।
এদিন দুই ছাত্র সংঘটনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে ৮ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আজ বিভিন্ন দাবিতে দুটি ছাত্র সংগঠনেরই উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ কর্মসূচি ছিল। সোমবার ছাত্রলীগের কর্মসূচির একটি অনুলিপি গণমাধ্যমে পাঠায়। অন্যদিকে ছাত্রদলও উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করার কথা জানায়। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
বিকেল সোয়া চারটার দিকে নীলক্ষেত দিয়ে ছাত্রদল ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। এর আগে থেকেই ভিসি চত্বরে অবস্থান নিয়ে ছিল ছাত্রলীগ। দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিলে এক পর্যায়ে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। এ সময় স্যার এ এফ রহমান হল সংলগ্ন এলাকায় ছাত্রদলের একাধিক কর্মীকে মারধর করা হয়।
সংঘর্ষের জন্য দুই পক্ষই পরস্পরকে দায়ী করেন। ছাত্রলীগ নেতারা বলেছেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির সামনে এসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। তারা ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে সুবিধা নিতে চাইছে। এটি প্রতিহত করতে ছাত্রলীগ প্রস্তুত।
ছাত্রদলের দাবি, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। তারা ক্যাম্পাসে একক আধিপত্য ও ত্রাসের রাজনীতি করতে চায়। এজন্য ছাত্রদলকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে বাধা দেয়া হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলামের দাবি, বিনা উসকানিতে হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। একাধিক নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে।
সঞ্জিত চন্দ্র দাস আরও বলেন, আপনারা জানেন, মিথ্যাচার থেকে জন্ম যে রাজনৈতিক দলের সেটি হচ্ছে বিএনপি। সেই বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল। অছাত্র, কু-ছাত্র, সন্ত্রাসীদের সংগঠন হচ্ছে ছাত্রদল। তাদের কর্মসূচি আছে কি নাই সেটা নিয়ে তো আমাদের মাথা ব্যথা নেই। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পারে। ভিসির সাথে দেখা করতে পারে, সাক্ষাৎ করতে পারে। আমাদের যে দাবি-দাওয়াগুলো ছিল সেগুলো ঢাবি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পেশ করা হয়েছে। আপনারা জানেন, আমরা এখানে অবস্থান করছি। বাহিরে যারা মিথ্যাচার করছে, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করেছে।
সংঘর্ষের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিভাবকত্ব ভিসি বা কর্তৃপক্ষের নিতে হয়। মর্যাদাপূর্ণভাবে প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন সহাবস্থানে থাকে এটাই আমাদের অবস্থান।
তিনি আরও বলেন, ঢাবি ক্যাম্পাস গণতান্ত্রিক ও মানবিক ক্যাম্পাস। কোন সংগঠনের সাথে কোন সংগঠনের আন্তরিকতার ঘাটতি আছে,তা আমার বোধগম্য নয়। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান যেন থাকে, সেটার ওপর সবসময় জোর দেয়া হয়। নির্দয় আচরণ যাতে না ঘটে, শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের এটাই শিখাই।
/এমএন
Leave a reply